ইনিংসের প্রথম বলেই স্লাইট ইনসুইং ডেলিভারি। শরিফুল ইসলামের আবেদনের সাথে সাথে আঙুল উঁচিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আম্পায়ার। কিন্তু এনামুল হক বিজয়ের চোখে-মুখে ছিল নিদারুণ হতাশা। অন্যদিকে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন শরিফুল। যেন অপেক্ষাতেই ছিলেন মাঠে নামার।
ক্যারিয়ারে উত্থানের পথে রয়েছেন বা-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। এমন সময়েও খেলতে পারলেন না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মত বড় বৈশ্বিক আসর। নিজেকেই হয়ত দোষারোপ করছিলেন তিনি পুরোটা সময়জুড়ে। ইনজুরিকেও দিচ্ছিলেন গালাগাল। ছন্দ হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও যে তিনি সেই অর্থে রাখতে পারেননি নিজের ছাপ।
সেই শরিফুল ফিরলেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে। লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জের হয়ে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন। সেই চিরায়ত সুইং ডেলিভারিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি। পরের উইকেটটা তিনি নেন আউট সুইং ডেলিভারিতে।
সালমান হোসেন ইমনের ব্যাটের বাইরের দিকের খোঁচা লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপার আকবর আলীর দস্তানায়। প্রথম ওভারে মাত্র দুই রানের বিনিময়ে দুই উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। বলা হয়ে থাকে সকালের সূর্যই নাকি বলে দেয়, সারাদিন কেমন যাবে। শরিফুলের শুরুটা তার পুরো ইনিংসের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবারও উইকেটে হানা দিলেন শরিফুল। এবার তার ইনসুইং ডেলিভারিতে পরাস্ত হলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এবার আর ব্যাটের বাহির দিককার খোঁচা নয়, সোজা স্ট্যাম্প উড়ে গেল বিপ্লবের। ঠিক একই কায়দা আউট হয়েছেন পারভেজ জীবন। শরিফুলের স্বল্প সময়ের সেই প্রবল ঝড়ে চার রানে গাজী গ্রুপের নেই পাঁচ উইকেট।
চোখ ধাঁধানো সব ডেলিভারিতে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিলেন শরিফুল। নিজের ছোড়া ৬০টি ডেলিভারির মধ্যে ৫০টি বলেই ডট আদায় করে নিয়েছেন তিনি। ১৪ রান খরচা করেছেন মাত্র। এমন দুর্ধর্ষ শরিফুলকেই তো চেনে সকলে। কিন্তু মাঝে তিনি নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন। বলহাতে রান মেশিনে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। সেসবকে পেছনে ফেলতে চাইছেন শরিফুল।
সময় বহমান, ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়টুকু বয়ে গেলে একটা সময় আফসোস ছাড়া থাকবে না কোন গতি। তাছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান পেস আক্রমণে জায়গা করে নেওয়াও ভীষণ কঠিন কাজ। অতএব প্রতিটা মুহূর্তে বাকিদের ছাপিয়ে যাওয়ার মিশনেই থাকতে হবে ব্যস্ত। শরিফুল যেন সেই ধ্যানেই নিজেকে করেছেন নিমজ্জিত।