শ্রেয়াস আইয়ার, পাঞ্জাবের নিজস্ব ফিনিক্স পাখি

নিশ্বাস-ফুরিয়ে-আসা একটা গল্প। শুরুটা হতাশা দিয়ে। মাঝপথে এসে হঠাৎ করে ছন্দ পালটে যায়। ফিনিক্স পাখি হয়ে ফিরে আসেন হারানো নাবিক। খুঁজে ফিরছেন নতুন কোনো দ্বীপ, নতুন কোনো হীরে-মানিক।

নিশ্বাস-ফুরিয়ে-আসা একটা গল্প। শুরুটা হতাশা দিয়ে। মাঝপথে এসে হঠাৎ করে ছন্দ পালটে যায়। ফিনিক্স পাখি হয়ে ফিরে আসেন হারানো নাবিক। খুঁজে ফিরছেন নতুন কোনো দ্বীপ, নতুন কোনো হীরে-মানিক। শ্রেয়াস আইয়ারের গল্পটা ঠিক এমনই — যেন একটা চুপচাপ জ্বলতে থাকা আগুন, যা সময়মতো বিস্ফোরণ ঘটায়। যেমনটা ঘটল এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)।

বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার কেন্দ্রী চুক্তি তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। এটুকু শুনেই অনেকে ধরে নিয়েছিল, শেষ হয়ে গেছেন আইয়ার! অথচ, ভারতকে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলতে তিনি নিজেও কম ঘাম ঝড়াননি।

আইয়ার জানতেন, এখানেই শেষ নয়—এ তো শুরু মাত্র। এরপর রঞ্জি ট্রফি, ইরানি কাপ, সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি, কলকাতার হয়ে আইপিএল শিরোপা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি—একটার পর একটা ট্রফি তুলে নিয়ে যেন তিনি ঘোষণা দিলেন, ‘আমার প্রত্যাবর্তন কোনো কাকতাল নয়, এটা আমি নিজ হাতে লিখেছি।’

মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জিতে মাঠে নামা, জাতীয় দলের নীল জার্সিতে ব্যাট তোলা, আবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফেরা—এ সবই একটা বড় কাব্যের আলাদা আলাদা ছন্দমাত্র। আর সেই কাব্যের নাম হতে পারে, ফিনিক্স পাখি – দ্য শ্রেয়াস আইয়ার ভার্সন।

কলকাতার হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। কিন্তু, মুখ ফিরিয়ে নেয় শাহরুখ খানের দল। তবে সবচেয়ে বড় রূপকথা তিনি বুনছেন পাঞ্জাব কিংসের হয়ে। পাঞ্জাব এমন একটা দল, যাদের জনয় জয় মানেই খুব বিরল মূহূর্ত। ১১ বছরের প্লে-অফ খরা যেদিন ভাঙল, সেদিন ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে শ্রেয়াস আইয়ারের চোখে যা ছিল, তা শুধুই আনন্দ নয় — তা ছিল মুছে ফেলা অপমান, ফিরিয়ে আনা মর্যাদা।

এখন প্রশ্ন একটাই—এই আগুন কি আরও ছড়াবে? একটি কাপ, একটি শিরোনাম, একটি মহাকাব্য—পাঞ্জাব কিংসের জন্য সেই ইতিহাস কি লিখবেন শ্রেয়াস আইয়ার? এখন সময়ের অপেক্ষা শুধু। তবে, আইয়ার জানেন, সময়কে কীভাবে নিজের বানাতে হয়।

Share via
Copy link