শুভাগতর গ্লানি মোচন

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স তাঁকে অধিনায়ক ঘোষণা করার পর হাসাহাসি তো কম হল না। দলে আফিফ হোসেন থাকার পরও চট্টগ্রামকে মাঠের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুভাগত হোম। মাঠে তাঁর সিদ্ধান্ত কিংবা সংবাদ সম্মেলনে তাঁর ইতস্তত জবাব সবকিছুই যেন প্রশ্নবিদ্ধ, কখনো কখনো হাসির খোরাকও। সব মিলিয়ে আজকাল নিজ দেশেই কী পরবাসী হয়ে গেলেন শুভাগত?

এটা ঠিক, বিপিএলে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নেতৃত্ব দেয়ার মত বড় নাম হয়তো তিনি নন। তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স তাঁকেই যোগ্য মনে করেছে। অবশ্য আফিফ হোসেন এই দায়িত্ব নিতে চাননি বলেই শুভাগতকে ভরসা করা হয়েছে। সীমিত সামর্থ্য নিয়েই মাঠে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন শুভাগত। এটাও ঠিক যে, বাইশ গজে সঠিক যা করেছেন, ভুল ছিল তারও বেশি।

তিনি অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থ,  দলও হিসেবেও ব্যর্থতার মোড়কে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন তাঁর নিজের পারফর্মেন্সের কারণেই। আজকে আগে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের একটি ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন। বল হাতেও ছিলেন নিষ্প্রভ।

আর নিজ দেশে পরবাসী হবার যে কথা বলছিলাম। আজকাল খেলা ছাড়া দেশে খুব একটা থাকেন না তিনি। ভারতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছেন। শুধু কোন টুর্নামেন্টে দল পেলেই খেলতে আসেন। এমনি জানা যায়, বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে তাঁকে রাখতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। কেননা পরিবার ছেড়ে সারাবছর দেশে থাকতে আর চান না এখন।

তবুও, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ তিনি। নিয়মিত পারফর্মার বললেও ভুল হবে না। অথচ সেই শুভাগতই ট্রলের শিকার হচ্ছিলেন তাঁর বাজে পারফর্মেন্সের জন্য। তাইতো এবারে বিপিএলে তাঁর জন্য ছিল শুধুই গ্লানি।

সেই গ্লানি ধুয়ে মুছে দেয়ার খানিকটা চেষ্টা করলেন আজ শুভাগত হোম। শুরুতে বল হাতে দলকে এনে দিয়েছিলেন উড়ন্ত শুরু। পাওয়ার প্লেতেই তুলে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। শেষ পর্যন্ত তিন ওভার বল করে মাত্র ১৩ রান খরচ করে পেয়েছেন ২ উইকেট।

তবে সেখানেই সন্তুষ্ট হননি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক। বল হাতের সেই ছন্দটা দেখিয়েছেন ব্যাট হাতেও। আজ ব্যাট করতে নেমেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন তিনি। যেন ১৮০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জেতার জন্যই খেলছিলেন তিনি।

শুভাগত হোম যখন খেলছিলেন তখন একটা সময় চট্টগ্রামের জেতার সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছিল। তবে শুভাগতকে আর কেউ সঙ্গটা দিতে পারেনি। তবে টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম অর্ধশতকটা তুলে নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

খেলেছেন ৩১ বলে ৫২ রানের ইনিংস। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৪ টি চার ও ৪ টি ছয় দিয়ে। ব্যাটিং করেছেন ১৬৭.৭৪ স্ট্রাইকরেটে। বল হাতে দুই উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতে আবার হাফ সেঞ্চুরি। বাইশ গজে একটা অসাধারণ দিনই কাটলো শুভাগত হোমের।

তবে অধিনায়ক হিসেবে নিজের ব্যর্থতার গ্লানি কোনভাবেই ঘোচাতে পারছেন না তিনি। রংপুরের বিপক্ষে আজও হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। আসরে মাত্র দুই জয় নিয়ে টেবিলের একেবারে নিচের দিকেই তাঁদের অবস্থান। প্লে অফে খেলার আশাও দিন দিন নিভে আসছে দলটার।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link