লাসিথ মালিঙ্গা ছিলেন রীতিমত বাংলাদেশের যমদূত। তার ওই স্লিঙ্গি অ্যাকশন টাইগার ব্যাটার ভুগিয়েছে খুব। সময় বদলেছে, লাসিথ মালিঙ্গারও সময় ফুরিয়েছে। কিন্তু বদলায়নি স্রেফ স্লিঙ্গি অ্যাকশনে বাংলাদেশের কুপোকাত হওয়ার গল্প। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসদের কাবু করতে লঙ্কান শিবিরে আছেন মাথিশা পাথিরানা ও নুয়ান থুসারা।
লাসিথ মালিঙ্গা মোটে ছয়টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই ছয়টি ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১১টি। সাদা বলের বড় ফরম্যাটে তো ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা আরও খানিকটা বেশি। ১৫ ম্যাচে ২৭ উইকেট গিয়েছে মালিঙ্গার ঝুলিতে।
তিনি এখন নেই বলে বাংলাদেশি ব্যাটারদের স্বস্তি পাওয়ার সুযোগ নেই। ভিন্নধর্মী ওই বোলিং অ্যাকশন তো রীতিমত একটা প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছে ওমন ভঙ্গির বোলিং আয়ত্ত্ব করার। সেই প্রজন্মের অন্যতম বাহক মাথিশা পাথিরানা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের কল্যাণে লাইমলাইটে এসেছেন তিনি বেশ ভালভাবেই।
সময়ের সাথে সাথে ক্রমশ আরও পরিণত হয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। বাংলাদেশের বিপক্ষে স্রেফ দু’টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। তাতেই তার শিকার সাত উইকেট। যদিও টি-টোয়েন্টিতে সেই অর্থে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করতে পারেননি পাথিরানা। তবে টাইগারদের নড়বড়ে মানসিকতাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার জন্যে তার ওই স্লিঙ্গি অ্যাকশন যথেষ্ট। বনের বাঘে না খেলেও তো বাংলাদেশ দলকে খায় মনের বাঘে।
শুধু মাথিশা পাথিরানাই যে বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্যে হুমকি তা কিন্তু নয়। পাথিরানার সাথে আছেন নুয়ান থুসারাও। বাংলাদেশের বিপক্ষে দু’টো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তার উইকেট সংখ্যা নয়টি। সিলেটে তো হ্যাটট্রিক অবধি রয়েছে নুয়ান থুসারার নামের পাশে।
পরপর তিন বলে নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছিলেন থুসারা। এছাড়াও সৌম্য সরকার ও শরিফুল ইসলামের উইকেট শিকার করে ফাইফার বাগিয়েছিলেন এই নুয়ান থুসারা।
এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে আবারও বাংলাদেশকে পেয়ে জ্বলে ওঠেন থুসারা। ওই ম্যাচে তার ঝুলিতে যায় চারটি উইকেট। তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদ তার উইকেটে পরিণত হয়েছিলেন। সেবার নুয়ানের খরচ হয়েছিল মাত্র ১৮ রান।
এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসংখ্যানগুলো বরং বলে দেয়, সাইড আর্ম অ্যাকশনের বোলারদের বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দূর্বলতা ঠিক কতটা ভয়াবহ। তার উপর টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হেরে বাংলাদেশ দল রয়েছে ব্যাকফুটে। থুসারা আর পাথিরানা তাইতো চেপে বসতে চাইবেন বাংলাদেশের উপরে।
টপ অর্ডারকে কঠিন সময়ের মুখোমুখি করবেন নুয়ান থুসারা। আর ডেথ ওভারে রান শুকিয়ে উইকেট নেওয়ার কাজে তো মাথিশা পাথিরানা সিদ্ধহস্ত। অতএব টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশের জন্যে নেই কোন আশার আলো। জয়ের ক্ষীণ সম্ভাবনা নিয়েই পাল্লেকেলেতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ দল।