ফর্ম না থাকলেও বিশ্বকাপ ভাবনায় ঠিকই আছেন সৌম্য সরকার। আর সেটাও পরিচিত ওপেনিং পজিশনে নয়। বরং, টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁকে ভাবছে সাত নম্বরের জন্য।
ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের আগে সাত নম্বর পজিশনটা বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের নাম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহান সহ বেশ কয়েকজনের নামই শোনা যাচ্ছে এখানে।
সেই ভাবনায় যোগ হয়েছেন সৌম্যও। একাধারে ব্যাক আপ ওপেনার হিসেবেও তিনি চাইলে দায়িত্বটা পালন করতেই পারেন। তবে, এখানে সমস্যা হল তাঁর ফর্ম।
মোহামেডানের হয়ে সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১২ ম্যাচ খেলে ১১ ইনিংসে সৌম্য করেন ২৯৩ রান। ২৬.৬৩ গড়ে তোলা এই রানে ছিল একটা সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি।
বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেতে এই রানটা আসলে কোনোভাবে যথেষ্ট না। তবে, আশার কথা হচ্ছে এখন জাতীয় দলের কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে।
চান্দিকা হাতুরুসিংহের প্রথম জমানায় তাঁর প্রিয় ছাত্র হওয়ায় নাকি জাতীয় দলের অটোমেটিক চয়েস ছিলেন সৌম্য সরকার! অবশ্য হাতুরুর সৌম্যপ্রীতির ব্যাপারটাকে গুঞ্জন না বলে, ওপেন সিক্রেট বললেও ভুল হয় না।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপের আগে মাত্র একম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাতেই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সৌম্যকে ভিড়িয়েছিলেন হাতুরুসিংহে। সৌম্য সেই ভরসার প্রতিদানও দেন। এ ছাড়া নিজের সময়কালে বরাবরই সৌম্যকে নিয়ে ইতিবাচক ছিলেন লঙ্কান এ কোচ।
অবশ্য হাতুরু অধ্যায় শেষ হওয়ার পরে সৌম্যও একটা সময় পর দল থেকে বাদ পড়ে যান। এরপর নিজেকে বারবার হারিয়ে খুঁজেছেন। জাতীয় দলে উঠেছেন অনিয়মিত। অবাক করা ব্যাপার হলো, সেই অনিয়মিত, অফ ফর্মের বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া সৌম্যকেই নাকি আবারো নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে এসে দলে পেতে চাইছেন হাতুরুসিংহে।
তিনি নির্বাচকদের মাধ্যমে সৌম্যর খোঁজখবরও রাখছেন এবার আসার পর থেকেই। ক’দিন আগেও তিনি নেটে পরখ করে দেখার জন্য ডেকেছিলেন সৌম্যকে। সেখানে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও ছিলেন।
সৌম্যকে দলে নেওয়া গেলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের দু’টো সমস্যা মিটে যায়। ব্যাক আপ ওপেনার পাওয়া যায়, আর চাইলে সাত নম্বরেও খেলানো যায় সৌম্যকে। সাথে মিডিয়াম পেস দিয়েও কখনও কখনও কার্যকর হতে পারেন সৌম্য।
কিন্তু, সৌম্য সরকারের বিগত বছর গুলোতে আন্তর্জাতিক রেকর্ডও বেশ বাজে। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে কোনো ফরম্যাটেই ঠিকঠাক জ্বলে উঠতে পারেননি। বারবার সুযোগ পেয়েছেন।
সেই সুযোগ তিনি হেলায় হারিয়েছেন, নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন কমই। আর বিশ্বকাপের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময়ও খুব বেশি হাতে নেই। এই অবস্থায় হাতুরুসিংহের চাপে পড়ে কি ঝুঁকি নিবেন নির্বাচকরা!