মিলার ম্যাজিকের জয়!

আরেকটি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের দেখা মিলল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। শেষ ওভারের নাটকে ডেভিড মিলার ও ক্যাগিসো রাবাদার ফিনিশিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার হ্যাটট্রিকের পরও জয়বঞ্চিত হল শ্রীলঙ্কা।

১৪৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ওপেনিং জুটিতে ২৫ রান এলেও এক ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে আফ্রিকা। তৃতীয় উইকেটে ভ্যান ডার ডুসেনের সাথে জুটি গড়েন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৪ রানের জুটির পথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হয়ে বিদায় নেন ডুসেন। খেলেন ১৬ রানের ইনিংস। এরপর চতুর্থ উইকেটে বাভুমার সাথে দলের হাল ধরেন এইডেন মার্করাম।

দু’জনের ব্যাটে বেশ ভালোই এগোতে থাকে প্রোটিয়ারা। চতুর্থ উইকেটে দু’জনে মিলে গড়েন ৪৭ রানের জুটি। এরপর দলীয় ৯৬ রানে ব্যক্তিগত ১৯ রানের হাসারঙ্গার বলে বোল্ড আউট হয়ে বিদায় নেন মার্করাম।

শেষ ৫ ওভারে প্রোটিয়াদের দরকার ৪৭ রান, হাতে ৬ উইকেট। সেখান থেকে শেষ ৩ ওভারে দরকার ৩১ রান। ১৮ তম ওভারের প্রথম দুই বলেই বাভুমা ও প্রিটোরিয়াসকে ফিরিয়ে হ্যাট্রিক উইকেট শিকার করেন তিনি। নিজের আগের ওভারের শেষ বলেই পেয়েছিলেন উইকেট। মূহুর্তেই ম্যাচের মোড় পাল্টে দেন হাসারঙ্গা। শেষ ২ ওভারে দরকার ২৫ রান, ক্রিজে প্রোটিয়াদের একমাত্র ভরসা বলতে মিলার!

১৯ তম ওভারে রাবাদার ছক্কায় আশা জাগে প্রোটিয়াদের। শেষ ওভারে দরকার ছিলো ১৫ রানের! বোলিংয়ে কুমারা, স্ট্রাইকে রাবাদা। শেষ ওভারে মিলারের দুই ছক্কায় এক বল বাকি থাকতে দুর্দান্ত এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে ২০ রানের পথে আনরিচ নর্কের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানে ফেরত যান কুশল পেরেরা। এরপর আসালাঙ্কা ও পাথুম নিসাঙ্কার ব্যাটে দ্বিতীয় উইকেটে আসে ৪১ রানের জুটি। মারমুখি ভঙ্গিতে খেলতে থাকা আসালাঙ্কা ১৪ বলে ২১ রান করে শিকার হন রান আউটের। পরের ওভারেই শূন্য রানে আউট ভানুকা রাজাপাকশে। ৬২ রানে তিন উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

এরপর শামসির শিকার হয়ে দ্রুত বিদায় নেন আভিস্কা ফার্নান্দো ও হাসারঙ্গাও! ৯১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন বিপাকে লঙ্কানরা। দাসুন শানাকা ও নিসাঙ্কার ব্যাটে এগোতে থাকে লঙ্কাবাহিনী। একপ্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে নিসাঙ্কা করেন ব্যক্তিগত ফিফটি। নিসাঙ্কাকে রেখেই ব্যক্তিগত ১০ রানে বিদায় নেন শানাকা। তবে একপ্রান্তে দ্রুত রান তুলতে থাকেন নিসাঙ্কা। ইনিংসের ১৯ তম ওভারে চামিকা করনারত্নে ও নিসাঙ্কাকে তুলে নেন প্রিটোরিয়াস। ৫৮ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭২ রানে বিদায় নেন নিসাঙ্কা।

শেষ পর্যন্ত নিসাঙ্কার ইনিংসে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে নিসাঙ্কা সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন। প্রোটিয়াদের হয়ে শামসি ও প্রিটোরিয়াস তিনটি করে উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা – ১৪২/১০ (২০ ওভার); নিসাঙ্কা ৭২(৫৮), আসালাঙ্কা ২১(১৪), শানাকা ১১(১২); শামসি ৪-০-১৭-৩, প্রিটোরিয়াস ৩-০-১৭-৩, নর্কে ৪-০-২৭-২।

দক্ষিণ আফ্রিকা – ১৪৬/৬ (১৯.৫ ওভার); বাভুমা ৪৬(৪৬), মার্করাম ১৯(২০), ডুসেন ১৬(১১); হাসারাঙ্গা ৪-০-২০-৩,

ফলাফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link