তাহলে কী দাঁড়াল? বিশ্বকাপ মঞ্চে কোনো প্রেডিকশন খাটে না – কথাটা অক্ষরে অক্ষরে পালন হচ্ছে। কে ভেবেছিল কাল ঐ স্পেন জাপানের কাছে আত্মসমর্পণ করবে? আর কেউ বা ভেবেছিল উরুগুয়ে বা ঘানা নয়, ব্রাজিলকে ৫ তারিখ রাতে নকআউট খেলতে হবে সাউথ কোরিয়ার সাথে! আসলে জাপান সেকেন্ড হাফে আঊট অ্যান্ড আউট প্রেসিংয়ে ফোকাস করছে।
ঠিক একই ট্যাকটিক্সে জার্মানিকেও হারিয়েছিল। যেই প্লেয়ারগুলো একটু কাহিল হয়ে পড়ছে ঠিক তখনই একেবারে পারফেক্ট ফ্রেশ লেগগুলো ইঞ্জেক্ট করে ম্যাচ নিয়ে বেরিয়ে চলে যাচ্ছে জাপান। কাল শুরু থেকে টমিয়াসূ, মিনামিনো ছিল না। নামল তখনই যখন স্পেন একটু ঢিলে। কামাডা আর ডাওন সেই সময় থেকেই উইং দিয়ে উঠে আসতে থাকল। প্রথম গোল!
আর পর্তুগাল? কিছুই না। পর্তুগালের রিজার্ভ বেঞ্চ ভাল থাকলেও, ভাল কুক না থাকলে বিরিয়ানিকেও পানসে বলে মনে হয় এবং জনাব ফার্নান্দো স্যান্টোস সেটাই। ইনি এই বিশ্বকাপের ওয়ান অফ দি বেস্ট স্কোয়াড নিয়ে বসে আছেন, কিন্তু কাকে কখন কোথায় ইউস করতে হবে জানেন না।
টিম রোনালদো নির্ভরতা কাটানোর জায়গা পাচ্ছে না আর। হাতে দুটো বক্স মিড, লেফট ওয়াইড মিড, ডিফেন্সিভ মিড নিয়েও স্রেফ পাকামি করে কোরিয়ার ডু অর ডাই ম্যাচের সামনে সেকেন্ড স্কোয়াড নামিয়ে দেখতে চাইল। এবং সেই সেকেন্ড স্কোয়াডে শুরু থেকে নেই রাফা লিয়াও। বদলে প্রেসিং ফুটবলের আবারও একটা নমুনা রেখে গেল সাউথ কোরিয়া। জিততেই হতো। এবং ওরা সেটা করল। উরুগুয়ের ঘানাকে হারিয়েও লাভ বিশেষ কিছুই হল না।
দ্য মোস্ট বিউটিফুল গেম অফ দিস আর্থ, ফুটবল। বারে বারে প্রমাণিত হয়। এই তো একজনকে দেখলাম লিখেছেন (নাম জানলে বলে দেবেন), প্রতিবার বিশ্বকাপ এলে মনে হয় এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ ম্যাচ অ্যান্ড দ্যাট’স দ্য বিউটি অফ ফুটবল। সনের মুখের চোট, ভাল উইঙ্গার নেই, তা সত্বেও ১১টা লড়াকু ছেলে গোটা মাঠে দাপিয়ে বেড়াল সেকেন্ড হাফে। আর সন? টটেনহ্যাম কেন ওকে ছাড়তে চায় না সেটার কারণ আজ স্পষ্ট।
আশা করি যারা শুধুই বিশ্বকাপ দেখছেন তাদের কাছে সন একটা বড় চমকের নাম। এই সনের সেকেন্ড গোলে ২০১৮ সালে পাকাপাকি ভাবে গ্রুপ স্টেজ থেকে ছিটকে গেছিল জার্মানি। আজ উরুগুয়ে। কাভানি, গোদিন, সুয়ারেজের এতদিনের একটা লেগ্যাসি শেষ হল। পড়ে রইল পেলেস্ত্রি, ভালভার্দে, নুনেজ, গিমিনেজ। ফিরে আসুক, আর কি।
রাউণ্ড অফ সিক্সটিন কড়া নাড়ছে। আরও কত যে চমক দেখার বাকি! অফুরান শুভেচ্ছা সাউথ কোরিয়া। এবং কালকের জাপান।