নখকামড়ানো এক রোমাঞ্চকর কাব্য

পুরো দল যখন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ছিলো তখন তিনিই ৩২ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে নৌকা তীরের কাছাকাছি এনে দিয়েছেন। সম্ভবত ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা '৩২' রানের ইনিংস বলা যায় তাঁর এই ইনিংসকে। একদিকে নাথান যখন ব্ল্যাকক্যাপসদের নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছিলেন তখন ভাঙা হৃদয় নিয়ে মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন চার উইকেট পাওয়া লাসিথ মালিঙ্গা আর তাঁর দল।

চার, ছক্কার মার দেখতে তো সবসময়ই ভাল লাগে, কিন্তু কখনো কখনো ধৈর্য ধরে খেলে যাওয়াটাই রোমাঞ্চ জাগায় দর্শক মনে। তেমনি একটা ম্যাচ ছিল ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, শ্রীলঙ্কা বনাম নিউজিল্যান্ডের দ্বৈরথ জন্ম দিয়েছিল ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা লো স্কোরিং থ্রিলারের। এখনো সে ম্যাচের কথা ভাবলে শিহরিত হতে হয়।

আগে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন মিচ ম্যাকক্লেনাগান। তিলকারত্নে দিলশান, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসদের ফিরিয়ে শুরুতেই প্রতিপক্ষের মেরুদণ্ড নড়বড়ে করে দেন তিনি। বাকি বোলাররাও ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন, লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপের কেউই তাই থিতু হতে পারেননি।

ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল একজন, কুমার সাঙ্গাকারা। দাঁতে দাঁত কামড়ে বাইশ গজে টিকে ছিলেন তিনি; এক প্রান্ত আগলে থেকে ৬৮ রানের সংগ্রামী এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। তাতেই মূলত ১৩৮ রানের সম্মানজনক পুঁজিতে পৌঁছায় দলটা। কিন্তু এতে কি জয়ের আশা করা যায়? জয়ের সম্ভাবনা থাকে?

কার্ডিফ অবশ্য তখন বোলারদের জন্য স্বর্গ, তবু এত অল্প রান হাতে রেখে লড়াই করার মনোবল ছিল না লঙ্কান বোলারদের মাঝে। নতুন বলের চ্যালেঞ্জ তাই সহজেই উতরে যায় কিউইরা, একটা সময় ১ উইকেটে ৪৮ রান জমা করে তাঁরা। তখনি একটা ঝড় উঠে, হুট করে চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করে দলটা। ১ উইকেটে ৪৮ থেকে পৌঁছে যায় ৬ উইকেট ৮০ এ – অর্থাৎ ৩২ রানের ব্যবধানে হারায় পাঁচ উইকেট।

হঠাৎ করেই জয়ের আশা জেগে উঠে লঙ্কান শিবিরে, নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের রোমাঞ্চ ধরে রাখে তাঁরা। শেষদিকে জয় থেকে পাঁচ রান দূরে থাকতেই নবম উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড; যদিও সব শেষে জয়ের হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়ে তাঁরা।

পুরো কৃতিত্ব অবশ্য দিতে হয় নাথান ম্যাককুলামকে, পুরো দল যখন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ছিলো তখন তিনিই ৩২ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে নৌকা তীরের কাছাকাছি এনে দিয়েছেন। সম্ভবত ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ‘৩২’ রানের ইনিংস বলা যায় তাঁর এই ইনিংসকে। একদিকে নাথান যখন ব্ল্যাকক্যাপসদের নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছিলেন তখন ভাঙা হৃদয় নিয়ে মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন চার উইকেট পাওয়া লাসিথ মালিঙ্গা আর তাঁর দল।

Share via
Copy link