চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চ মানেই উত্তেজনা, সেরা দলগুলোর মহারণ। কিন্তু প্রতি আসরেই কিছু তারকা ক্রিকেটার রয়ে যান দর্শকের আসনে। কখনো ফর্মহীনতা, কখনো দলীয় কৌশল, কখনো বা চোট—নানা কারণে জায়গা হয় না তাঁদের। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে থাকছেন না ক্রিকেট আকাশের এক ঝাঁক মহাতারকা। কার্যত তাঁরা অনায়াসে যে কোনো দলকে শিরোপার দাবিদার করে তুলতে পারতেন। তাঁদের নিয়ে গড়া এই একাদশট যদি মাঠে নামত, তাহলে নিশ্চিতভাবেই প্রতিপক্ষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ত!
- ওপেনিংয়ে যশস্বী জয়সওয়াল ও সায়িম আইয়ুব, তিনে লিটন।
উদ্বোধনী জুটিতে থাকছেন ভারতের যশস্বী জয়ওয়াল ও পাকিস্তানের সায়িম আইয়ুব। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার লিটন দাস থাকবেন তিনি। জয়সওয়াল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকলেও, শেষ মুহূর্তে টিম কম্বিনেশনের জন্য বাদ পড়েন। তবে, স্ট্যান্ডবাই তালিকায় আছেন তিনি।
অন্যদিকে, সায়িম আইয়ুব পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ তারকা, তবে ইনজুরি তাঁকে ছিটকে দিয়েছে। তিনে থাকা লিটন সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মহীনতায় ভুগছেন, স্বাভাবিক ভাবেই বাদ পড়েছেন। উইকেটের পেছনে লিটন হতে পারেন সেরা পছন্দ
- মিডল অর্ডার: অভিজ্ঞতা ও পাওয়ার হিটিংয়ের মিশেল
এই তালিকার অন্যতম বড় চমক মিশেল মার্শ, যিনি অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক সাফল্যের অন্যতম প্রধান কাণ্ডারি ছিলেন। সঙ্গে রয়েছেন জ্যাকব বেথেল, ইংল্যান্ডের প্রতিশ্রুতিশীল অলরাউন্ডার। তবে মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান!
বাংলাদেশের এই সুপারস্টার গত এক যুগ ধরে দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ভরসা ছিলেন, এবার তাকে ছাড়া মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেলোয়াড়ি জীবনে সাকিব এর আগে কখনওই আইসিসি ইভেন্ট মিস করেননি।
একইভাবে, অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোয়িনিসও এই আসরে নেই। থাকবেন কি করে, হুট করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তিনি ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। চার থেকে সাত – এই পজিশনগুলোতে খেলবেন তাঁরা।
- বোলিং বিভাগ: বিশ্বসেরা পেস আক্রমণ
দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেতে পারেন প্যাট কামিন্স, পেস আক্রমণের নেতাও তিনি। তার সঙ্গে বোলিং আক্রমণ সামলাতে থাকছেন জাসপ্রিত বুমরাহ ও মিশেল স্টার্ক এবং — বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেস ত্রয়ী! কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার, এই টুর্নামেন্টে তাদের কাউকেই দেখা যাবে না।
এখানে আনরিচ নরকিয়া ও জশ হ্যাজেলউডও ছিলেন আলোচনায়, কিন্তু, টিম কম্বিনেশনের জন্য তাঁরা বাদ পড়েছেন। উপায়ও নেই। দলে এক গাদা অলরাউন্ডার। সাকিব, বেথেল কিংবা স্টোয়িনিস – সবাই ১০ ওভার বোলিং করার ক্ষমতা রাখেন।
স্পিন বিভাগে আছেন আফগানিস্তানের তরুণ প্রতিভা আল্লাহ ঘজনফর। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারেন তিনি। স্পিন আক্রমণে কাজে লাগবে সাকিবের অভিজ্ঞতা। জ্যাকব বেথেলও আছেন, স্পিন আক্রমণ সব মিলিয়ে বেশ বৈচিত্রময়। ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনের সাথে তাঁরা মানানসই।
দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে চাইলে তামিম ইকবালকে রাখাই যায়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার আগেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।
আলোচনায় রাখা যেত নিউজিল্যান্ডের লোকি ফার্গুসনকেও। পেস বোলারদের বিবেচনায় রাখলে বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম কিংবা হাসান মাহমুদরাও কম ছিলেন না।
- শিরোপার দাবিদার?
এখন প্রশ্ন হল, এই দলটি কি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপার দাবিদার হতে পারত? এই একাদশে এমন সব তারকা আছেন, যারা প্রায় সবাই নিজেদের সেরা দিনে একাই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারেন। যদি তারা একসঙ্গে মাঠে নামতেন, তাহলে কোনো দলই সহজে এই একাদশটার সাথে পেরে উঠবে না।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই তারকাদের অনুপস্থিতি দলগুলোর ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়!
- খেলা ৭১ নির্বাচিত সেই একাদশটি হল –
১. যশস্বী জয়সওয়াল – ভারত
২. সায়িম আইয়ুব – পাকিস্তান
৩. লিটন দাস – বাংলাদেশ (উইকেটরক্ষক)
৪. মিশেল মার্শ – অস্ট্রেলিয়া
৫. সাকিব আল হাসান – বাংলাদেশ
৬. জ্যাকব বেথেল – ইংল্যান্ড
৭. মার্কাস স্টোয়িনিস – অস্ট্রেলিয়া
৮. প্যাট কামিন্স – অস্ট্রেলিয়া (অধিনায়ক)
৯. মিশেল স্টার্ক – অস্ট্রেলিয়া
১০. জাসপ্রিত বুমরাহ – ভারত
১১. আল্লাহ গজনফর – আফগানিস্তান
দ্বাদশ ব্যক্তি – তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)