সুরিয়াকুমার যাদব মানেই একের পর এক নান্দনিক শট আর গ্যালারিতে থেকে থেকে ভেসে আসা উল্লাস ধ্বনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভারতের এই ব্যাটার খেলেছিলেন ব্যতিক্রমি এক ইনিংস, করেছেন সময় উপযোগী ব্যাটিং।
৪৯ বলে ৫০ রান, আপাত দৃষ্টিতে একটি ওয়ানডে ম্যাচের ইনিংস মনে হলেও এটি চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইনিংস। সেটাও আবার ভারতের ব্যাটার সুরিয়াকুমার যাদবের। অবাক করা বিষয় হলো, তিনি এই ইনিংস খেলেছেন স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। না, সে ম্যাচ হারেনি ভারত। বরং এই ইনিংসের কল্যাণেই বিজয় নিশ্চিত হয়েছে তাঁদের।
তাইতো আলোচনা চলছে সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী তাঁর ব্যাটিংকরার উর্বর মানসিকতা নিয়ে। পরিসংখ্যান বলছে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) বেশি বেশি ১ রান নেয়া দলগুলোও পরাজয়ে সম্মুখীন হয়ে থাকে।
আইপিএল বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বেশি সিঙ্গেল রান নেয়ার কারণেই দলগুলো ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। অর্থাৎ, আপনি সিঙ্গেল রান না নিলে, আপনাকে অবশ্যই বাউন্ডারি অথবা দুই-তিন রান নিতে হবে। যা আপানাকে বড় স্কোর করতে সাহায্য করবে।
তবে সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ টি সিঙ্গেল রানের বিপরীতে ভারত নেয় ৪৪ টি। আর এ কারণেই ৭ উইকেটে জয় পেয়ে যায় অতি সহজেই। সুরিয়াকুমার যাদব আর শিভাম দুবের প্রশংসনীয় ধৈর্য্যের বিনিময়ে বিজয় আসে ভারতের বন্দরে।
এই ম্যাচে সুরিয়কুমার যেন ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হন। আয়ারল্যান্ড এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের দুই ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে মাত্র ২ এবং ৭ রান। আর সেখান থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বনে যান বিজয়ের নায়ক। তাঁর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করার মানসিকতা বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে বিশ্ব মঞ্চে।
ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা তাঁর প্রশংসা করে বলেন, ‘সে (সুরিয়াকুমার যাদব) সত্যিই অসাধারণ খেলেছে। আপনি এমনটাই প্রত্যাশা করতে চাইবেন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থেকে। ২২ গজে স্থির থাকার জন্য সে সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার।’
তবে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আলি খান কিংবা সৌরভ নেত্রাভালকারের চেয়ে জাসপ্রিত বুমরাহ অথবা মোহাম্মদ সিরাজ খানিকটা বেশি সুবিধা পেয়েছেন। কেননা তাঁদের বলে ছিল স্লো অথবা মিডিয়াম গতি। পিচের অস্বাভাবিক আচরণে আর আলি-নেত্রাভালকারের বলে ভড়কে যাননি ৩২ বছর বয়সী ডান হাতি এই ব্যাটার।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সেই ম্যাচে সুরিয়াকুমার যেন জানান দিলেন, পিচের অবস্থা যেমনই হয়, ২২ গজে সুরিয়া আছেন সবসময়। তিনি তাঁর ইনিংস জুড়ে রেখে গিয়েছেন অভিজ্ঞতার ছাপ। আর তাঁর সেই ইনিংসের কল্যাণেই পরবর্তী পর্বের টিকিট পেয়ে যায় ভারত।