চাইলেন একটু চরণ ধুলি। কিন্তু মহেন্দ্র সিং ধোনি বড্ড বিনয়ী। একজন এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের বয়োজেষ্ঠ্য খেলোয়াড়, আরেকজন সর্বকনিষ্ঠ। পিতৃতুল্য ধোনির আশীর্বাদ পেতে ঝুকে যাওয়া সুরিয়াভানশিকে তিনি টেনে তুললেন। তার এমন কর্মে খানিকটা বিস্মিত বৈভব। তবে ধোনি যেন বোঝাতে চাইলেন, ‘তোর জন্যে আমার আশীর্বাদ আছে, কদমবুচি না করলেও চলবে।’ ক্রিকেট প্রেমীদের মনে দোলা দিয়ে যাওয়ার মত এক দৃশ্য!
বৈভব সুরিয়াভানশি, ম্যাচ জেতানো ৫৭ রানের একটা ইনিংস খেললেন। বেশ দায়িত্ব নিয়ে, কর্তৃত্ব ফলিয়ে তিনি বিচরণ করলেন বাইশ গজে। উইকেটের পেছন থেকে দাঁড়িয়ে সবটাই দেখেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। চারিদিকে সোরগোল পড়ে গেছে সুরিয়াভানশিকে নিয়ে। কৈশরের গণ্ডি পেরোয়নি এখনও। তবে ছোকড়া কি ব্যাটিংটাই না করে!
এই বিস্ময়ের ঘোরে ধোনিও নিশ্চয়ই আটক। এত অল্প বয়সে কত ভারিভারি নামের মোকাবেলা করছে ছেলেটা অনায়াসে। তবুও সুরিয়াভানশি কি আর দূর আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র! গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে এখনও চলে ‘ধোনি, ধোনি’ হিল্লোল। ভারতের ক্রিকেটের এক অবিস্মরণীয় চরিত্র। পরম শ্রদ্ধাভাজনও বটে।
ক্যারিয়ারের একেবারের শুরুতেই এমন এক মহারথীর পদধূলি নেওয়ার লোভ কি আর সামলানো যায়! কে জানে, কাল কি লেখা আছে! তাইতো সুরিয়াভানশি বিনম্র শ্রদ্ধাভরে কদমবুচি করতে চাইলেন ধোনিকে। নিতে চাইলেন আশীর্বাদ।
সব আশীর্বাদ তো আর চেয়ে নিতে হয় না। বিস্ময়ভরা নয়নে ধোনি যখন দেখেছেন ক্ষুদে সুরিয়ার তাণ্ডব, তখনই তো অগোচড়ে ঈশ্বরের কাছে ধোনি নিশ্চয়ই করেছেন প্রার্থণা। কামনা করেছেন সুরিয়া ও তার ক্যারিয়ারের দীর্ঘায়ু।
পৃথিবী কি এক অপূর্ব জায়গা! সময়ের রুঢ় ঝাপটার দৃশ্য আঁকে প্রতিনিয়ত। এই যেমন ধোনি-সুরিয়াভানশির এই কদমবুচির দৃশ্য। একজন এগিয়ে যাচ্ছেন শেষের পথে, আরেকজন পথটা ধরে এগুতো শুরু করেছেন কেবল। ক্রিকেট ময়দানে সময়ের এমন বিরল খেলার মঞ্চায়ন কি আর কখনো দেখা যাবে?