অপ্রত্যাশিত বিশ্বকাপ বঞ্চনা

কড়া নাড়ছে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া প্রতিটি দলই নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছে, ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়াতে প্রতিনিধিত্ব করবেন নিজ দেশের। দারুণ সব ক্রিকেটারদের মাঝে থেকে সেরা পনেরো বাছাই করা কঠিন কাজ। দলের কম্বিনেশন, ইনজুরিসহ নানা সমস্যায় অনেক সময় ছিটকে যান নানা তারকা।

ইতোমধ্যেই দল থেকে ছিটকে গিয়েছেন অনেকে, তবে আইসিসির নতুন নিয়মের সুবাদে একদম শেষ মুহূর্তে দলে ডাক পেতে পারেন অনেকে। আবার ডাক না পেলে তাঁদের বঞ্চিতই বলা যায়। কারণ, বিশ্বকাপ খেলার যথেষ্ট যোগ্যতা বা ফর্ম তাঁদের আছে। অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা।

  • দীপক চাহার (ভারত)

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়ক রোহিত শর্মার আস্থার এক নাম বোলিং অলরাউন্ডার দীপক চাহার। কিন্তু ইনজুরির কারণে গত কয়েক মাস যাবৎ দলের বাইরে তিনি। ইনজুরির কারণে এবারের আইপিএলেও খেলতে পারেননি চাহার।

ইনজুরি কাটিয়ে এবারের এশিয়া কাপে দলে ফেরেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচে খেলতে নেমে খুব একটা মন্দ করেননি, ২৮ রানে তুলে নেন এক উইকেট। যদিও শেষপর্যন্ত তাকে বিশ্বকাপের দলে রাখেননি নির্বাচকরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে শেষমূহুর্তে ভারতীয় দলে ডাক পেতে পারেন রিজার্ভ স্কোয়াডে থাকা চাহার।

  • জেসন রয় (ইংল্যান্ড)

বিগত কয়েক মাস ধরেই রানের মধ্যে নেই ইংল্যান্ডের ওপেনার জেসন রয়। শেষ এগারো ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়েছেন মাত্র একবার। স্ট্রাইক রেটটাও ঠিক রয়সুলভ নয়, মাত্র ১০৪। ফলশ্রুতিতে এবারের বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েছেন জেসন রয়। 

কেবল টি-টোয়েন্টি নয়, একদিনের ক্রিকেটেও ব্যাট হাতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না রয়ের। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাত ম্যাচের টি- টোয়েন্টি সিরিজ থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি। যদিও সাবেক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন বিশ্বাস করেন রয় এখনো পূর্বের বিধ্বংসী রূপে ফিরতে পারেন এবং বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখেন।  

  • ক্যামেরন গ্রিন (অস্ট্রেলিয়া)

তরুণ অস্ট্রেলিয়ান পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন জাতীয় দলের প্রথমবারের ওপেনিং করতে নেমে খেলেছেন ৩০ বলে ৬১ রানের ম্যাচ জয়ী এক ইনিংস। কেবল ব্যাট হাতে নয়, বল হাতেও যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেবার সামর্থ্য রাখেন গ্রিন। শেন ওয়াটসনের পর বহু বছর বাদে ক্যামেরন গ্রিনে অজিরা পেয়েছে আস্থার জায়গা। 

এখনো ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা দুই অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোয়িনিস এবং মিশেল মার্শ। তারা সময় মত ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে না পারলে ক্যামেরন গ্রিন হতে পারেন তাদের আদর্শ রিপ্লেসমেন্ট।

  • আন্দ্রে রাসেল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ দলে আন্দ্রে রাসেলের না  থাকাটা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিলো বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের। নিজ থেকে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করলেও নির্বাচকরা উপেক্ষা করেছেন এই অলরাউন্ডারকে। 

বিশ্বের টি -টোয়েন্টি লিগগুলোর নিয়মিত মুখ রাসেল ২০২১ সালের পর আর জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেননি। এই সময়টাতে তিনি ব্যস্ত ছিলেন বিশ্বজুড়ে ফ্যাঞ্চাইজি লিগ খেলায়। ব্যাট হাতে দারুণ সব ছক্কা হাঁকানোর পাশাপাশি বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ সব বেকথ্রু এনে দিতে পটু রাসেল। ক্যারিবিয়ানদের হয়ে ৬৭ ম্যাচে ১৫৭ স্ট্রাইক রেটে ৭৪১ রান সংগ্রহের পাশাপাশি বল হাতে ৩৯ উইকেট শিকার করেছেন রাসেল। 

  • শেখ মেহেদী হাসান (বাংলাদেশ)

গত দুই বছর ধরে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ শেখ মেহেদী হাসান। পারফরমেন্সও মন্দ নয়, গত এক বছরে তাঁর ইকোনমিটাই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে কম। কিনতি এশিয়া কাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে তাঁর বাজে পারফরম্যান্সই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মেহেদীর জন্য। 

 ঘরোয়া ক্রিকেটে ভয়ডরহীন  ব্যাটিং আর কার্যকরী অফস্পিনের সুনাম আছে মেহেদীর। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে গত কয়েক মাসে ব্যাট হাতে ছিলেন নিষ্প্রভ। সে কারণেই মূল দলে না থাকলেও তিনি আছেন রিজার্ভ স্কোয়াডে। শেষ মূহুর্তে বিশ্বকাপের মূল দলে মেহেদী সুযোগ পেয়ে গেলেও আশ্চর্যের কিছু থাকবে না।

  • সুনীল নারাইন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

সতীর্থ আন্দ্রে রাসেলের মতো আরেক ক্যারিবিয়ান তারকা সুনীল নারাইনকেও দল থেকে বাদ দিয়েছেন নির্বাচকরা। মূলত রহস্য বোলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ব্যাটিংটাও মন্দ করেন না নারাইন। 

যদিও বেশ বড় একটা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে নারাইন। ৩৪ বছর বয়সী এই অফস্পিনার সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক টি- টোয়েন্টি ক্যারিবিয়ানদের হয়ে মাত্র ৬.০১ ইকোনমিতে শিকার করেছেন ৫২ উইকেট। পাশাপাশি ওপেনিং এ ব্যাট করতে নেমে ১১২.৩১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৫৫ রান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link