সাকিব আল হাসানের নাম বাংলাদেশ ক্রিকেটে ফুলস্টপ দিয়েই লেখা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার, সেরা অলরাউন্ডার, সেরা বোলার — সব জায়গায় সাদা পোশাকে একাই রাজত্ব করেন তিনি।
বিদেশের মাটিতে পাঁচবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। খেলেছেন ২৬ টি টেস্ট। বোলিং গড় ৩৩.২৮, স্ট্রাইক রেট ৬৬.২। পরিসংখ্যান এখানে কথা বলে, এখানে যেমন বলছে—সাকিব মানেই ধারাবাহিকতা, সাকিব মানেই ভয়ংকর কার্যকারিতা। এবার তাকানো যাক তাইজুল ইসলামের দিকে। পরিসংখ্যানটা অবাক করে দেয়।
মাত্র ১৮ টি টেস্ট, তবু সাকিবের সমান—৫ বার ইনিংসে ৫ উইকেট। গড় ৪২.৬৯, স্ট্রাইক রেট ৭৬.০০। গড় আর স্ট্রাইক রেটে সাকিব এগিয়ে ঠিকই, কিন্তু ১৮ টেস্টে পাঁচটা ফাইফার — এই জায়গাটাই বলে দেয়, তাইজুল নিজের অবস্থান কোথায় নিয়ে গেছেন।
না, সাকিবের সঙ্গে তুলনা নয়। তুলনার ভার তাইজুলের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। তবে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা, উন্নতি আর পরিশ্রমের যে নীরব সংগ্রাম—তা নি:সন্দেহে তাইজুলকে ‘আন্ডাররেটেড রত্ন’ বানিয়ে দিয়েছে। তাইজুল বলেন, ‘সাকিব ভাইয়ের মত কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে ছাড়িয়ে যেতে পারলে অবশ্যই ভাল লাগবে।
বোলিংয়ের সৌন্দর্য নয়, নিজেকে কাজে লাগানোর তীব্রতা — এই জায়গাটাই এখন তাইজুলের আলাদা পরিচয়। সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাস হলেও তাইজুলকে বলা উচিৎ নীরব কিংবদন্তি।
পরিসংখ্যান কখনওই তাইজুলকে নিয়ে মাতামাতি করেনি। তবু লড়াই করেছেন, মুখ বুজে বয়ে গেছেন। উইকেট ফ্ল্যাট, সহায়তা কম, সাপোর্ট কম — তবু তিনি বারবার উইকেট তুলে এনে দিয়েছেন স্বস্তি, দিয়েছেন লড়াইয়ের শক্তি। শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড—ভিনদেশের ঘূর্ণিহীন উইকেটেও তাইজুল ঠিকই খুঁজে নিয়েছেন পথ।
ব্যক্তিগত লক্ষ্য নয়। তাইজুল মেটাতে চান দলীয় চাহিদা। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নেই আমার। দেশের হয়ে সার্ভিস দেওয়াাই মুখ্য ব্যাপার।’ আর এই সার্ভিস দেওয়াতেই অনন্য তাইজুল। পথ যতই কঠিন হোক — তিনি খুঁজে নেন আলোর পথ।