সবুজ গালিচায় তাসকিন আহমেদের দৌড়ে বেড়ানো। বাংলাদেশের ক্রিকেটে গত বছর এটাই বোধহয় ছিল সবচেয়ে সুখকর দৃশ্য। এই যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে তাসকিনের সে কী দৌড়। তবে সেই দৌড় আর আজকে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তাসকিনের দৌড়ে বেড়ানোতে পার্থক্য অনেক। আজ তাসকিন পুরোটা সময় দৌড়েছেন শুধু নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য।
ঢাকা ডমিনেটর্সের হয়ে বিপিএল খেলার সময়ই ইনজুরিতে পড়েছেন বাংলাদেশের এই পেসার। সেজন্য দলটার হয়ে শেষ দিকের ম্যাচগুলোও খেলেননি। দলটার হয়ে ৩০ জানুয়ারি খেলেছেন শেষ ম্যাচ। এরপর থেকেই বিশ্রামে রাখা হয়েছে তাসকিন আহমেদকে। কেননা মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে আসছে ইংল্যান্ড দল। আর সেখানে তো তাসকিনকে চাই ই চাই।
মূলত হ্যামস্ট্রিং গ্রেড ওয়ান ধরণের টিয়ার দেখা গিয়েছিল তাঁর। ঢাকার ফিজিও সেই সময় জানিয়েছিলেন, এ ধরণের চোট থেকে সেরে উঠতে দেড় থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগে। ওদিকে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও জানিয়েছিলেন একই রকম কথা।
তিনি বলেছিলেন,’ ‘হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে দুই সপ্তাহ বিশ্রাম দেয়া হয়েছে তাসকিনকে। ইনজুরি খুব বেশি গুরুত্বর নয়। দলের হয়ে বিপিএলের বাকি ম্যাচগুলোতে খেলবেন না তিনি। কিছুদিন পরই অনুশীলন শুরু করবে সে। আমরা মনে করি আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজ খেলতে তার কোন সমস্যা নেই।’
বিশ্রাম শেষে আবার মাঠে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ। বিপিএল শেষ হল একদিন আগেই। তাই মিরপুর স্টেডিয়ামে খুব বেশি লোক নেই। তবুও সকাল সকাল মিরপুরে নিজের রিহ্যাব সেশন শুরু করেছেন এই পেসার। অ্যাকাডেমী মাঠে দৌড়েছেন বেশি খানিকক্ষণ। তবে এখনও বোলিং শুরু করেননি তাসকিন।
তাসকিন আহমেদ আজ নিজের রিহ্যাব সেশন শেষে গনমাধ্যমকে বলেন,’ ইনজুরি থেকে ফিরছি। রিহ্যাব সেশন শুরু করে দিয়েছি। বোলিংটাও শুরু করে দিব। এখন আস্তে আস্তে লোড বাড়বে। কয়েকদিন পর টিম অনুশীলনও শুরু হবে। তাঁর আগে নিজের যে প্রোগ্রাম ছিল সেটা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।‘
সব ঠিকঠাক থাকলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদকে পাওয়া যাবে সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। এখনো প্রায় দুই সপ্তাহ সময় আছে এই পেসারের সামনে। ফলে তিনি নিজেও ইংল্যান্ডের সাথে খেলতে মরিয়া।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে এই পেসার বলেন,’ অবশ্যই সহজ হবে না। ওরা সব ফরম্যাটেই ভালো ক্রিকেট খেলছে। তাই বলে আমরাও থেমে থাকব না। আমাদের সক্ষমতা আছে ওদের সাথে জেতার। আমরাও নিজেদের সেরাটা দিব। আমরাও জেতার জন্যই মাঠে নামব।‘
ওদিকে নিজের বলের গতি নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা নিয়ে তাসকিন বলেন,’ আমি যেহেতু পেস বোলার, গতির সাথে আপোষ করতে পারব না। অন্তত ১৪০ গতিতে বল করে স্যুইং পেলে সেটা কার্যকর হয়। আমার ইচ্ছা আছে ১৫০ এ বোলিং করার। তবে সেটার জন্য অনেক বেশি নিখুঁত হতে হবে আরো। শুধু পেস থাকলেই যে কার্যকর হবে এমনও না। তো সবই মেইনটেইন করে এগিয়ে যেতে চাই।‘
২৪ ফেব্রুয়ারি তিন ওয়ানডে এবং তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। তবে সিরিজের আগে কয়েক ম্যাচের জন্য পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ডাক পেয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। মুলতান সুলতানের হয়ে তিন ম্যাচ খেলার প্রস্তাব এসেছিল তাসকিনের কাছে। তবে ইংল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতিকেই বেশি প্রাধান্য দিলেন এই পেসার।
এর আগে দেশের হয়ে খেলার জন্য আইপিএলেও খেলতে যাননি তিনি। এই বিষয়ে তাসকিন বলেন,’ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার চেয়ে দেশের হয়ে খেলাটাই মূল লক্ষ্য। আইপিএল খেলতে পারিনি বলে আক্ষেপ নেই। ভালো করলে সামনে আরও সুযোগ আসবে। দিনশেষে জাতীয় দলে খেলার জন্যই তো কষ্ট করা।’