১৬৯-এ সৌম্যর ক্যারিয়ারের পুনর্জন্ম?

সৌম্য সরকার ফিরলেন অবশেষে। দীর্ঘ একটা রান খরা কাটিয়ে তিনি ফিরলেন রাজার মতই। লিটন দাসের পরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সেরা ইনিংসটাই খেলে ফেললেন তিনি, করলেন ১৫১ বলে ১৬৯ রান। তবে এর পরেও একটা প্রশ্ন উঠই যাচ্ছে – এই ইনিংসটা কি যথেষ্ট সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ারকে পুনর্জীবিত করতে?

সৌম্য সরকারের শুরুটা ছিল রাজসিক। অভিষেক ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের সাথে। অভিষেকেই ইঙ্গিত দেন রাজত্ব করার। চারটা বাউন্ডারির সাহায্যে করেন ১৮ বলে ২০ রান। তবে আউটও হয়ে যান খুব দ্রুতই। সৌম্য সরকারের পুরো ক্যারিয়ারের হাইলাইটসও এই ব্যাপারটা- ইনিংস বড় করতে না পারা। সেজন্যই কিনা এই প্রায় দশ বছরের ক্যারিয়ারে তার সেঞ্চুরি সংখ্যা মাত্র চার।

নেলসনের ইনিংসটা ছাড়া ক্যারিয়ারের পুরো দৃশ্যটাই তার এরকম – ভাল শুরুর পরও ইনিংস ধরে রাখতে না পারা। পাশাপাশি তার অধারাবাহিকতাও বেশ স্পষ্ট। ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ সময়েই একটা দুটো ইনিংসে ভালো খেলে তারপরে চলে গেছেন অফফর্মে।

একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে এটা বেশ বেমানান, যার কারণে দলকে বিপদে পড়তে হয়েছে বেশ অনেকবারই। তবে এক্ষেত্রে তার স্ট্রাইক রেট বেশ ভাল। ওয়ানডেতে তার স্ট্রাইক রেট ৯৭, যা গড়পরতা বাংলাদেশি ব্যাটারদের ওপরে। আজকের ইনিংসেও তার প্রমাণ রেখেছেন তিনি। ইনিংস শেষে তাই তার স্ট্রাইক রেট ১০০-এর উপরে।

তাই, হাজারও সমালোচনার পরও এই স্ট্রাইক রেটই সৌম্যর এক্স ফ্যাক্টর। গুঞ্জন আছে, কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের প্রিয় পাত্র তিনি। সেটা কার্যত হাতুরুর ভয়ডরহীন কৌশলের অংশ।

তবে, এটা অনেকটাই নির্দিষ্ট কোনো টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র হলে, সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।  দীর্ঘমেয়াদে ভাবলে, যেকোনো দলই চাইবে এমন টপ অর্ডার ব্যাটার যে কিনা বড় ইনিংস খেলতে পারেন নিয়মিত।

যদি আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কথা বিবেচনা করা হয় তাহলে তাঁর পক্ষে যুক্তি দেবে স্পোর্টিং উইকেট। স্পোর্টিং বিশেষ করে বাউন্সি উইকেটে সৌম্য কার্যকর। যেমন এই নিউজিল্যান্ডে তাঁর ওয়ানডে স্ট্রাইক রেট ৯২, গড় ৩২।

আয়ারল্যান্ডে তার স্ট্রাইক রেট ১০৮, পাকিস্তানে ১২০, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০৭, জিম্বাবুয়েতে ১২৪। এগুলো ব্যাটিং সহায়ক কন্ডিশন। বিপরীতে বাংলাদেশের  ধীর গতির উইকেটে তাঁর স্ট্রাইক রেট কম হওয়াই স্বাভাবিক, যা ৮৮। সেটাও অন্য অনেকের চেয়ে ‘বেটার’।

বড় আসরে সৌম্যর আক্রমণাত্মক কৌশল বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চয়ই কাজে লাগাতে চাইবে। তাই, এই ইনিংসটা সৌম্য সরকারকে আরও কিছু সময় বাজিয়ে দেখার সুযোগ দেবে।

তবে, বিষয়টা পুরোপুরিই এখন সৌম্যর হাতে। ধারাবাহিক হতে পারলে টিকবেন, না পারলে ঝরে যাবেন – এটাই তাঁর নিয়তি। তবে, একবার ধারাবাহিক হলে – তিনিই যে বাংলাদেশের তৃুরুপের তাস হবেন – সেটা আর বলে না দিলেও চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link