বল ট্র্যাকিং বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দিলেন নবী!

বল ট্র্যাকিং যা-ই বলুক, নবী নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন, তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। এমনকি, তিনি যখন ক্ষুব্ধ হন, তখন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। আইসিসির প্রযুক্তি হয়তো ভুল করতে পারে, কিন্তু নবীর নিয়তি তাঁর নিজের হাতেই লেখা থাকে।

নিজের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না মোহাম্মদ নবী। বিস্ময়ভরা চাহনিতে আম্পায়ারের দিকে তাকিয়ে যেন বলতে চাইলেন— ‘বল ট্র্যাকিংয়ের কি মাথা খারাপ?’ কিছুক্ষণ আগেই যিনি ইতিহাস গড়লেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে প্রথম কোনো আফগান হিসেবে উইকেট নিলেন, সেই তিনিই কিনা এমন অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্তের শিকার!

আফগান ক্রিকেটের বহু ‘প্রথম’ এর সঙ্গেই তো নবীর নাম জড়িয়ে আছে, তবে এই ‘প্রথম’ যে এমন অন্যায়ভাবে ধরা দেবে, সেটা হয়তো তিনিও ভাবেননি। শুধু নবী নয়, পুরো আফগান দলই বিস্মিত!

ঘটনার শুরুটা এমন— নবীর দুর্দান্ত এক ডেলিভারি, ব্যাটার টেম্বা বাভুমাকে সম্পূর্ণ পরাস্ত করল। বল প্যাডে লাগতেই আপিল, আম্পায়ারের সরাসরি আউটের সিদ্ধান্ত। আফগানিস্তানের উচ্ছ্বাস! কিন্তু বাভুমা রিভিউ নিতেই দৃশ্যপট বদলে গেল। বল ট্র্যাকিং বলছে, বল নাকি স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত! অথচ খালি চোখেই মনে হচ্ছিল, বল স্টাম্প ভেদ করবেই। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত উল্টে গেল, বেঁচে গেলেন বাভুমা।

বিস্মিত নবী তখন আম্পায়ারের কাছে গেলেন, যেন বুঝতে চাইছেন— এই কীভাবে সম্ভব? তবে তিনি জানতেন, কিছুই বদলাবে না। বল ট্র্যাকিংয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। কিন্তু মন কি মেনে নেয়? অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের ক্ষোভ জমে রইল ভেতরে।

কিন্তু নবীও তো মোহাম্মদ নবী! যিনি কখনো হার মানেন না, যিনি ৪০ বছর বয়সেও প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর এক অস্ত্র। সেই জমে থাকা ক্ষোভটা তিনি উগড়ে দিলেন ঠিক পরের বলেই। এবার আর কোনো প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ল না। নিখুঁত এক ডেলিভারি, বাভুমা স্লগ করতে চাইলেন, কিন্তু বল আকাশে উঠে গেল। ডিপ মিড উইকেটে তালুবন্দি করলেন সাদিকুল্লাহ অটল! নবীর প্রতিশোধ মুহূর্তের মধ্যেই।

নবীর বয়স ৪০ ছুঁয়েছে আরও ৫১ দিন আগে। এই বয়সে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তো দূরের কথা, পেশাদার ক্রিকেটে টিকে থাকাই বিরল। তাঁর চেয়েও বয়সে ছোট বহু ক্রিকেটার এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ধারাভাষ্যে ব্যস্ত, খেলার মাঠ নয়, মাইক্রোফোনেই তাঁদের দখল। কিন্তু নবী সেখানে শুধু মাঠে নেমেই ক্ষান্ত নন, পারফরম্যান্স দিয়েও দেখিয়ে দিচ্ছেন, অভিজ্ঞতা আর ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ক কীভাবে প্রতিপক্ষকে শাসন করতে পারে।

বল ট্র্যাকিং যা-ই বলুক, নবী নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন, তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। এমনকি, তিনি যখন ক্ষুব্ধ হন, তখন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। আইসিসির প্রযুক্তি হয়তো ভুল করতে পারে, কিন্তু নবীর নিয়তি তাঁর নিজের হাতেই লেখা থাকে।

Share via
Copy link