১৪ বছর বয়সে আপনি কোথায় ছিলেন? টিফিন নিয়ে মারামারি করছিলেন, কিংবা ভাবনাহীন কোনো ভবিষ্যতের কথা ভাবতে ভাবতে কোচিং ক্লাস ছেড়ে ফিরছিলেন। সেই বয়সেই একটা ছেলে ভারতের ক্রিকেটের ময়দারে সূর্য হয়ে জ্বলছে। বৈভব সুরিয়াভানশি এখন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) টক অব দ্য টাউন। ৩৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলার পরও যেভাবে আউট হওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেন সাজঘরে, তাতেই বোঝা যায় – তিনিই ভারতের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ।
কিন্তু, একটা যদি/কিন্তু তো থাকেই। ঈশান কোনো মেঘ জমলেই তো বুকের কোণে ভয় হয়। এই ভারত থেকেই তো হারিয়ে গেছেন উন্মুক্ত চাঁদ, পৃথ্বী শ কিংবা তন্ময় শ্রীবাস্তবরা। সেজন্য পা মাটিতে রাখা জরুরী। বৈভবের পা মাটিতেই আছে। তাই তো সামান্য সিনিয়র যশস্বী জয়সওয়ালের সাথে ব্যাটে ভুলক্রমে পা লেগে গেলে তাতে হাত ছুয়ে আশীর্বাদ নেন বৈভব। বলতে পারেন, এটাই তাঁর অনুশাসন। ম্যাচ শেষে সবাই যখন প্রতিপক্ষের সাথে হাত মিলিয়ে ফিরেন, তখন তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনির পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন।
পা এতটা মাটিতে আজকাল আর কেউ রাখে না। সেটা স্মরণ করে দিয়েছিলেন খোদ বীরেন্দ্র শেবাগও। বলেছিলেন, ‘ভাল খেললে লোকে ভাল বলবে। এটা জানার চেয়েও জরুরী যে, দুদিন রান না করলেই লোকে সমালোচনা করবে। তাই পা মাটিতে রাখতে হবে। আমি অনেক খেলোয়াড়কে দেখেছি যারা প্রথম কয়েক ম্যাচে ভাল খেলে নিজেদের জনপ্রিয় ভাবতে শুরু করে। নিজেদের স্টার ভাবতে শুরু করে।’
কথাটার জন্য সাবেক এই ওপেনারকেও সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু, বৈভব নিজেও জানেন, ক্রিকেটের বাস্তবতা এমনই। এখানে আজ যে রাজা, কাল ব্যাট না চললে তিনি পথে বসতে বাধ্য। যতদিন, ব্যাট চলবে ততদিন কথা হবে, ব্যাট না চললেই সমালোচনা। বৈভব তাই জানেন নিজের সীমানা, তিনি আকাশে উড়তে চান সেটাও পা মাটিতে রেখেই।