দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এখনো কোন জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। তবে এবারের সফরে এই ইতিহাসটা পাল্টে ফেলতে চায় বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে কিংবা টেস্ট যেকোন ফরম্যাটেই জয়ের দেখা পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ ওদিকে কেপ টাউনে টেস্ট দল চালিয়ে যাচ্ছে নিবিড় অনুশীলন।
দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং কন্ডিশন বিশ্বের যেকোন দলের জন্যই কঠিন। উপমহাদেশের বড় বড় দলগুলো গিয়েও সেখানে হিমসিম খায়। তবে বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা এক দুর্গের নাম। সে দুর্গ বাংলাদেশ কখনোই ভেদ করতে পারেনি। বাংলাদেশের জন্য তেমনই আরেক দুর্ভেদ্য দুর্গ ছিল নিউজিল্যান্ড।
তবে এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মুমিনুলরা লড়াই করিয়ে দেখেছেন। মাহমুদুল হাসান জয়, এবাদত হোসেনরা এনে দিয়েছেন স্বপ্নের এক জয়। আর সেই জয় বাংলাদেশ দলের উপর প্রত্যাশাও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও এবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয় দেখতে চায়। সেজন্য যথাসাধ্য চেষ্টাও করেছে বিসিবি।
কেপ টাউনে গ্যারি কার্স্টেনের ক্রিকেট একাডেমিতে টেস্ট দলের সদস্যরা নিজেদের সেরা প্রস্তুতিই নিচ্ছে। এর আগে বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পেও রাখা হয়েছিল টেস্ট দলের সদস্যদের। আর সেই ক্যাম্প করা হয়েছিল বগুড়ার পেস বোলিং বান্ধব পিচে। যেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে টেস্ট দলের সদস্যরা।
বগুড়ায় ক্যাম্প করা নিয়ে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক ক্রিকবাজকে বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা আর বগুড়ার কন্ডিশন তো এক হবেনা নিশ্চয়ই। তবুও এটাই আমাদের প্রস্তুতির জন্য সেরা জায়গা ছিল।’
গ্যারি কার্স্টেনের একাডেমিতে শর্ট বল নিয়েই বেশি কাজ করছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। এছাড়া গ্যারি কার্স্টেনকেও দেখা যায় মুমিনুলদের নিয়ে কাজ করতে। অনুশীলনে এই কোচের সাথে কী নিয়ে কাজ করলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেটাই জানাচ্ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। টেস্ট স্কোয়াডে না থাকলে দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্যাম্পে দলের সাথে আছেন তিনি।
মোহাম্মদ মিঠুন বলেন, ‘আসলে কার্স্টেন আমাদের আইডিয়া দিচ্ছিলেন যে এই কন্ডিশনে আমাদের অ্যাপ্রোচ কি হওয়া উচিৎ। আমার মনে হয় এখানে ১০ টা সেশন শেষ করার পর আমরা অন্তত এটা বুঝতে পারব যে এখানে কীভাবে ক্রিকেটটা খেলতে হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন বেশ কঠিন। আমরা সেন্ট্রাল উইকেটে ব্যাটিং করে বুঝতে পেরেছি এখানে লাল বলে ব্যাটিং করা কতটা কঠিন। কার্স্টেনও আমাদের সেটাই বলেছেন। এখানে ওভারে তিন-চার করে নেয়া বেশ কঠিন। ফলে ধৈর্য্য ধরাটা খুব জরুরি। একটি বলে আপনি হয়তো চার মারতে পারবেন আবার একই জায়গার আরেকটা বল বাউন্স বেশি করতে পারে। সেই বলে আউট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ফলে এখানে কখনো কখনো টেকনিকের চেয়েও ধৈর্য্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।’
সবমিলিয়ে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে প্রস্তুতিটা ভালোই নিচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়াও আরো স্বস্তির জায়গা আছে বাংলাদেশের জন্য। স্বাগতিক দেশটির পেস বোলিং আক্রমণের মূল সদস্যরাই সিরিজটি মিস করতে যাচ্ছেন। কেননা কাগিসো রাবাদারা চলে যাবেন আইপিএল খেলতে।
তবুও দক্ষিণ আফ্রিকায় সাফল্য পেতে হলে মূল লড়াইটা করতে হবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। মাউন্ট মঙ্গানুইতে জয়রা যেই ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছিল সেটাই আবার করে দেখাতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবেই হয়তো ভাঙা যেতে পারে কঠিন এই দুর্গ।