পাওয়ার প্লে-তে উইকেট নেওয়াকে তিনি রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। সাথে মিতব্যয়ী বোলিং তো আছেই। তাই, জাতীয় দল হোক কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট – শেখ মেহেদী হাসানকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
বোঝাই যাচ্ছে, চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বড় একটা সময় পাওয়া যাবে না খোদ সাকিব আল হাসানকে। তাই, স্পিন বোলিংয়ের দায়িত্বটা নিজের হাতেই তুলে নিচ্ছেন শেখ মেহেদী হাসান। এই সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আবারও নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রাখলেন বেশ জোরেশোরেই।
চার ওভার বোলিং করে ১৮ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। সবগুলো উইকেটই পাওয়ার প্লে-তে। আর এজন্যই, সিলেট স্ট্রাইকার্সের টপ অর্ডার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি, দিন শেষে বোর্ডে জমা করতে পারেনি বলার মত সংগ্রহ।
এটাই শেখ মেহেদী হাসানের বিশেষত্ব। শেখ মেহেদী বোলিং করেন পেসারদের ঢংয়ে। পিচের ওপর বলকে হিট করানো তাঁর বোলিংয়ের বৈশিষ্ট্য, ফলে টার্ন একটু কম হলেও বল স্কিড করে বেশি। সেজন্য স্পোর্টিং পিচে এই ডান-হাতি সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন। আবার একই কারণে পাওয়ার প্লে আর ডেথ ওভারেও ব্যবহার করা যায় তাঁকে।
একই সাথে তাঁর ব্যাটিংটাও প্রয়োজনে হয়ে উঠতে পারে কার্যকর। ২০১৫ সালে খুলনা দলে যখন ডাক পেলেন তখন জাতীয় লিগে নিজের অভিষেক ম্যাচেই নিজের ব্যাটের ধারটা দেখালেন মেহেদী। প্রথম ম্যাচেই দুই ইনিংসেই করেছিলেন হাফ সেঞ্চুরি। পরের ম্যাচের প্রথম ইনিংসে খেললেন ১৪০ রানের ইনিংস। এরপর থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে এক কার্যকর ব্যাটারের নাম শেখ মেহেদী।
ব্যাট-বলে নজর কেড়ে দ্রুতই চলে আসেন জাতীয় দলের আওতায়। ২০১৭ সালের শেষ দিকে সর্বপ্রথম জাতীয় দলে ডান পান এই অলরাউন্ডার। তবে জাতীয় দলে নিজের শুরুটা খুব ভালো করতে পারেননি। ফলে নিয়মিত সুযোগও মেলেনি। তবে, সময় নিয়ে তিনি থিতু হয়েছেন জাতীয় দলে। এখন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তিনি নিয়মিত পারফর্মারদের একজন।
তিনি হয়তো খুব নজর কারা রিস্ট স্পিনার নন। কিংবা বল প্রচণ্ড টার্ন করাতে পারেন তাও না। তবে মেহেদী খুব সহজে ব্যাটসম্যানদের রান করতে দিবেন না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও একেরপর এক ডট বল করে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলে দেন। ফলে অন্য প্রান্তের বোলারদের জন্য উইকেট পাওয়ার কাজটা সহজ হয়ে যায়। যার জন্য, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড হোক কিংবা সিলেট – সবাই ভুগেছে মেহেদীর সামনে।