এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলাম থেকে আগেই নাম সরিয়ে নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তাই বাংলাদেশীদের মাঝে কেবল মুস্তাফিজুর রহমানের সামনে সুযোগ ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করার। তবে সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে তাঁর দল পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল শূন্যের ঘরে, যদিও শেষমেশ ভিত্তিমূল্য দুই কোটি রুপিতে তাঁকে স্কোয়াডে ভিড়িয়েছে চেন্নাইয়ের সুপার কিংস।
কিন্তু জাতীয় দলের জার্সিতে শরিফুল ইসলামও এখন মুস্তাফিজের চেয়ে এগিয়ে। তাহলে কেন চেন্নাই এমন সিদ্ধান্ত নিলো – এর উত্তর খুঁজতে হলে ফিরে যেতে হবে অতীতে, আইপিএলে এই পেসারের পরিসংখ্যান দেখতে হবে।
এখন পর্যন্ত তিনটি ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে খেলা ফিজ মাঠে নেমেছেন ৪৮ বার। উইকেট নিয়েছেন ৪৭টি, ইকোনমিতে আটের কম আর স্ট্রাইক রেট প্রায় ২৩। রান বন্যার এই লিগে এমন বোলিং মোটেই ফেলনা নয়। এছাড়া আইপিএলের ইতিহাসে একমাত্র বিদেশী ক্রিকেটার হিসেবে উদীয়মান তারকার পুরষ্কার জিতেছেন তিনি; সবমিলিয়ে তাই আরেকবার তাঁর উপর ভরসা করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
এছাড়া টিম কম্বিনেশন অনুযায়ী দলটির স্কোয়াডে বাঁ-হাতি পেসার প্রয়োজন ছিল। সেক্ষেত্রে কম পারিশ্রমিকে মুস্তাফিজুরই সেরা পছন্দ, বিশেষ করে চেন্নাইয়ের পিচে এই তারকা অন্য যেকোনো পেসারের চেয়ে বেশি বিধ্বংসী হওয়ার সামর্থ্য রাখেন। আবার পুরো মৌসুম সময় দিতে পারাটা এই বাঁ-হাতির দল পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে। তাসকিন, শরিফুলরা যেখানে পিছিয়ে গিয়েছেন সেটাই ‘প্লাস পয়েন্ট’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর জন্য।
শুনতে হাস্যকর মনে হলেও কাটার মাস্টারকে কেনার পেছনে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের উন্মাদনা। নিলামের পর থেকেই চেন্নাইয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্টগুলো সয়লাব হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে, যা তর তর করে বাড়িয়ে দিয়েছে দলটির অনলাইন বিচরণ। সত্যি বলতে, কমার্শিয়াল এই যুগে এসবও ফ্রাঞ্চাইজিদের মুখে চওড়া হাসি এনে দেয়।
দিন শেষে অবশ্য মুস্তাফিজের কাছ থেকে পারফরম্যান্স দেখতে চাইবে তাঁর সতীর্থরা, ভরসার প্রতিদান চাইবে টিম ম্যানেজম্যান্ট। অতীতে বহুবার ডেথ ওভারে নিজের ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন তিনি, এবার সময় এসেছে হলুদ জার্সিতে জাদুকর বনে যাওয়ার। কাটার মাস্টার কি পারবেন আরেকবার ঝলক দেখাতে নাকি হতাশ করবেন এবারও – দেখার অপেক্ষায় আছে পুরো বাংলাদেশ।