গৌতম গম্ভীর কখনোই ‘জনপ্রিয়’ হওয়ার জন্য ক্রিকেট খেলেননি, কলকাতা নাইট রাইডার্সের জমানাতেও কোনো জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেননি। নিয়েছেন সব কার্যকর সিদ্ধান্ত। তিনি যা ঠিক মনে করেন, সেটাই করেন। ভারতীয় দলের কোচ হিসেবেও তাই। ফল যাই হোক, নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনড় থাকেন। এই মানসিকতা নিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতিয়েছেন ভারতকে।
ভারত যখন দুবাইতে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল, তখন অনেকের চোখ কপালে উঠেছিল বরুণ চক্রবর্তীর দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে। শেষ মুহূর্তে ডাক পান। নিন্দুকেরা বলেছিলেন, আইপিএলে ভালো করলেই কি জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া যায়? ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠের পারফরম্যান্সই কি সব? গম্ভীর এসব কথার তোয়াক্কা করেননি। তাঁর যুক্তি ছিল পরিষ্কার—প্রতিপক্ষকে চমকে দিতে হবে, আর সেই কাজে বরুণের চেয়ে ভালো কেউ নেই।
একইভাবে অক্ষর প্যাটেলকে পাঁচে পাঠানো, কুলদীপ-বরুণ জুটিকে একসঙ্গে খেলানো, কিংবা ফর্মে থাকা ঋষাভ পান্তকে একাদশ থেকে ড্রপ করে লোকেশ রাহুলকে একাদশে রাখা—এসব সিদ্ধান্ত ব্যাকফায়ার করলে আজ হয়তো গম্ভীরের কাঁধে দোষের পাহাড় চাপাতো সবাই। কিন্তু তিনি জানতেন, তিনি যা করছেন, সেটা সঠিক। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার—তিনি বদলাননি।
গম্ভীরের এই মানসিকতা অনেকটা ইস্পাতের মতো কঠিন। ওটাই গম্ভীর, ঘারের পেছনের রগটা তাঁর শক্ত। ভেতরে এক ধরনের হিংস্র জেদ লালন করেন তিনি। ‘যা করেছি, ঠিক করেছি। না পোষালে বেরিয়ে যাও!’—এটাই যেন তাঁর নীতিবাক্য।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পর গম্ভীর যখন সাংবাদিকদের সামনে এলেন, তাঁর চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ ছিল না। ছিল এক ধরনের আত্মবিশ্বাসের দীপ্তি। এক সাংবাদিক জানতে চাইলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল, এখন কী বলবেন?’ গম্ভীরের উত্তর সংক্ষিপ্ত — ‘ক্রিকেট মাঠে কথা বলে। বাকি সব বাজে কথা।’
এই জেদ, এই একগুঁয়েমি, এই অদম্য মানসিকতাই গম্ভীরের সাফল্যের চাবিকাঠি। তিনি বদলাননি, ফল বদলে দিয়েছেন। এটাই গম্ভীর! আর গৌতমের সাথে পাঙ্গা নিলে ভুল করবেন। গৌতম গম্ভীর মানেই কলার তোলা রোয়াব!