এখনও দোদুল্যমান বাংলাদেশের বিশ্বকাপের ভাবনা। অধিনায়ক যে ঠিক কে হবেন, সেটারও নেই কোন নিশ্চয়তা। তবে ঝামেলার এই কালো মেঘ কেটে যাবে সেটা নিশ্চিত। বাংলাদেশ এবারের বিশ্বকাপে ভাল কিছু করার প্রত্যয়েই নামবে মাঠে।
এর আগে অবশ্য বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের নিয়ে কৌতুহল জাগতেই পারে। বাংলাদেশ এখন অবধি মোট ৬টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে। যেখানে সর্বোচ্চ চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল।
রানের বিচারে তারাই রয়েছেন এগিয়ে। তবে সেরা পাঁচে রয়েছেন আরও দু’জন। খেলা ৭১ এর আয়োজনে আজকে তাই থাকছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকা।
- সৌম্য সরকার
সম্ভাবনার আলো জ্বেলেই আগমন ঘটে সৌম্য সরকারের। ২০১৫ বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে দৃশ্যপটের বাইরে থেকে দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন সৌম্য সরকার।
তবে, সেবার প্রত্যাশার পুরোটা নিঙড়ে দিতে হয়েছিলেন ব্যর্থ। সেই আসরে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৭৫ রান। মূলত এনামুল হক বিজয়ের ইনজুরিতেই কপাল খুলেছিল সৌম্যের।
২০১৯ বিশ্বকাপে স্বাভাবিকভাবেই সৌম্যের উপর আস্থা ছিল বেশি। ইংল্যান্ডের বাউন্সি পিচে ক্লিন হিট করবার ক্ষমতা তার ছিল বাকিদের চাইতে সবচেয়ে বেশি। তবে সে বিশ্বকাপেও পারফরমেন্সের গ্রাফটা নিম্নগামী হয়েছে। ১৬৬ রান করেছিলেন তিনি। দুই বিশ্বকাপে সৌম্যের মোট রান ৩৪১। কেবল একটি অ-র্ধশতক নিয়ে তিনি রয়েছেন পঞ্চম স্থানে।
- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
২০২৩ বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ খেলবে কিনা সে নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে তিনি বাংলাদেশের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ ইতোমধ্যেই খেলে ফেলেছেন। আস্থাভাজন এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তিনটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে রিয়াদের রান সংখ্যা ৬১৬।
২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে, তার হাত ধরেই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দেখা পায় বাংলাদেশ। এরপর আরও একটি সেঞ্চুরি তিনি তুলে নেন সেই বিশ্বকাপেই। টানা দুই সেঞ্চুরি। সেবারের আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। ৩৬৫ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
- তামিম ইকবাল খান
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন তামিম ইকবাল খান। দীর্ঘ একটা ক্যারিয়ারে তিনি বাংলাদেশের জার্সিতে এখন অবধি চারটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন। নড়বড়ে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং করেছেন। মাথা উঁচু করে রান সংগ্রহ করেছেন। রয়েছেন তিন নম্বরে।
চার বিশ্বকাপ খেলা তামিম কোন সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও, তার রয়েছে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি। যার একটি ভারতের বিপক্ষে ২০০৭ বিশ্বকাপে। যখন বাংলাদেশ নিতান্তই এক খর্বশক্তির দল। সব মিলিয়ে তামিম ৭১৮ রান করেছেন তার বিশ্বকাপের ক্যারিয়ারে।
- মুশফিকুর রহিম
এমনি এমনি তো আর মুশফিকুর রহিমকে ‘মিস্টার ডিপেন্ডবল’ ডাকা হয় না। তিনি ভরসার এক দৃঢ় স্তম্ভ। বাংলাদেশের বহু জয়ের নায়ক তিনি। বিশ্বকাপে লাল-সবুজের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে তার ব্যাট থেকেই। সেই ২০০৭ সালে ক্ষুদে মুশফিকের যাত্রা শুরু। এরপর তিনি খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ।
১টি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফ সেঞ্চুরিকে সঙ্গী করে ৮৮৭ রান করেছেন তিনি এখন অবধি। ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০২ রানে ছিলেন অপরাজিত। সেটাই তার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এছাড়াও বহু সময়ে তিনি বাংলাদেশের ব্যাটিং ধস সামলেছেন শক্ত হাতে।
- সাকিব আল হাসান
অভিষেকের পর থেকেই বিশ্ব ক্রিকেটে দাপটের সাথে পথ চলছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ‘পোস্টার বয়’ হয়েই আলো ছড়িয়েছেন তিনি ক্রিকেট দুনিয়ায়। এক সাকিব আল হাসান ঠিক কতটা ভয়ংকর, তা ২০১৯ বিশ্বকাপই প্রমাণ। একা হাতে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি।
সেই টুর্নামেন্টে তিনি ছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনিই ছিলেন। এমনকি বিশ্বকাপের ইতিহাসে টাইগারদের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
২০১৯ বিশ্বকাপে দুই সেঞ্চুরি ও ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেছেন তিনি। এছাড়া চার বিশ্বকাপে ১০ হাফ সেঞ্চুরি সহ মোট ১১৪৬ রান রয়েছে সাকিবের নামের পাশে।