পাকিস্তান ক্রিকেটে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। তবে এবার বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের ব্যর্থতা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় নতুন এক বিতর্কে জড়িয়েছেন পাকিস্তানের তিন সাবেক ক্রিকেটার আব্দুল রাজ্জাক, উমর গুল ও শহীদ আফ্রিদি। মূলত, বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে টেনে এনেই এই বিতর্কের শুরু করেছেন আব্দুল রাজ্জাক।
পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আরো ভালোভাবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় পিসিবির আরও উদ্যোগী হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ঐশ্বরিয়ার উদাহরণ টেনে আনেন সাবেক এই অলরাউন্ডার। আর তাতেই সকল সমালোচনার উৎপত্তি হয়।
তিনি বলেন, ‘আমার সময়ে ইউনুস খান অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর ভাল পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল। আর তাতে আমি ক্রিকেটার হিসেবে আরো অনুপ্রেরণা পেতাম। প্রত্যেকেরই নিজস্ব একটা পন্থা আছে। আপনি যদি মনে করেন ঐশ্বরিয়া রায়কে বিয়ে করে একটা ভালো ও ধার্মিক বাচ্চার জন্ম দেবেন, সেটা তো হবে না। আগে নিজের মানসিকতা ঠিক করতে হবে। বুঝতে হবে যে আমি কী চাই। না হলে ভাল ক্রিকেটারও তৈরি হবে না আর পাকিস্তানও জিততে পারবে না।’
ঐশ্বরিয়াকে টেনে রাজ্জাক যখন এমন মন্তব্য করেন, তখন তাঁর দুই পাশে ছিলেন শহীদ আফ্রিদি ও উমর গুল। কিন্তু এমতাবস্থায় রাজ্জাককে তাঁরা থামানোর চেষ্টাটাও করেননি। উল্টো দুজনেই হাসতে হাসতে একই সঙ্গে দিয়েছেন হাততালি।
আর এরপর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। অনেকেই মনে করছেন, এভাবে ক্রিকেট ভিত্তিক আলোচনায় ঐশ্বরিয়াকে টেনে তাঁকে আদৌতে অসম্মানিতই করা হয়েছে। আর সবচাইতে দৃষ্টিকটু ব্যাপার হিসেবে ধরা দিয়েছে, গুল আর আফ্রিদি এই নিন্দনীয় কাজটাকে হাততালি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন।
যদিও এ ঘটনার দিন দুয়েক না গড়াতেই নিজের অবস্থান নিশ্চিত করেছেন উমর গুল। সেই ভিডিও ফুটেজে গুলকে হাত তালি দিতে দেখা গেলেও তিনি টুইটারে তা এক প্রকার অস্বীকার করে বসেন।
আব্দুল রাজ্জাকে বিরুদ্ধে গিয়ে সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি হাত তালি দিইনি। সে ঐশ্বরিয়ার কথা টানার আগে যে গুলো বলেছিল, সে কারণে হাত তালি দিয়েছি। যে আলাপ চারিতায় উপস্থিত নেই, তাঁকে টেনে এনে যে কোনো কথাই বলাই অসম্মানজনক ও মানহানিকর।’
এ দিকে রাজ্জাকের এমন কাণ্ডে মুখ খুলেছেন এক সময়কার সতীর্থ শোয়েব আখতারও। তিনি টুইটারে জানিয়েছেন, ‘রাজ্জাক যে অহেতুক মজা করেছে, সেটার চরম নিন্দা করছি আমি। এভাবে কোনও মহিলাকে অসম্মান করা উচিও নয়। তবে ওর পাশে যারা বসেছিল, তাদের ঐ কথাটা শোনার পর না হেসে আর হাততালি না দিয়ে সেটার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল।’
অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন আব্দুল রাজ্জাক। নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি মুখ ফঁসকে ঐশ্বরিয়া রায়ের নাম বলে ফেলেছি। এর জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। কাউকে আহত করার উদ্দেশ্য আমার ছিল না। একটা উদাহরণ টানতে গিয়ে ভুল করে তাঁর নাম নিয়েছি।’