তামিমের যত অবমূল্যায়িত মাস্টারপিস

তবে কখনো কখনো এমন হয়েছে তামিম নিজের কাজটা করেছেন ঠিকই, কিন্তু মূল্যায়নটুকু পাননি। অন্য কারো উজ্জ্বলতার কাছে চাপা পড়ে গিয়েছে তাঁর অর্জন। তাই তো তাঁর বিদায়ের ক্ষণে খেলা-৭১ চেষ্টা করেছে আড়ালে পড়ে থাকা পারফরম্যান্স আলোতে তুলে আনতে।

পোর্ট অব স্পেন, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড, লর্ডস, বুলাওয়ে কিংবা মিরপুর – তামিম ইকবাল যেখানেই পা রেখেছেন সেখানেই নিজের চিহ্ন রেখে গিয়েছেন। তাঁকে মনে রাখার জন্য ইনিংসগুলোর যেকোনো একটাই যথেষ্ট; জহির খানকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে ছক্কা হাঁকানো কিংবা লর্ডসে নাম লেখানো – তামিমকে আপনার মনে রাখতেই হবে।

তবে কখনো কখনো এমন হয়েছে তামিম নিজের কাজটা করেছেন ঠিকই, কিন্তু মূল্যায়নটুকু পাননি। অন্য কারো উজ্জ্বলতার কাছে চাপা পড়ে গিয়েছে তাঁর অর্জন। তাই তো তাঁর বিদায়ের ক্ষণে খেলা-৭১ চেষ্টা করেছে আড়ালে পড়ে থাকা পারফরম্যান্স আলোতে তুলে আনতে।

  • ১৪, ১২৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০০৯)

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের কিভাবে সামলাতে হয় সেটা প্রথম শিখিয়েছিলেন চট্টলার খান সাহেব। সতীর্থ ব্যাটাররা যেখানে আসা যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত, সেখানে তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৮ রানের ঝলমলে একটা ইনিংস খেলে তাক লাগিয়ে দেন – আর সেই পারফরম্যান্সে ভর করে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।

  • ওয়ানডে বিশ্বকাপ (২০১১)

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল টিম টাইগার্স। সেই ম্যাচের নায়ক হিসেবে শফিউল কিংবা মাহমুদউল্লাহ, ইমরুলের নাম যতটা শোনা যায় তামিম ইকবালের নাম এর সিকিভাগও শোনা যায় না।

অথচ ওপেনিংয়ে নেমে ২৬ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তিনিই জয়ের আশা তৈরি করেছিলেন। একই কাজটা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও করেছেন এই বাঁ-হাতি, তাঁর ৪৪ রানের ইনিংসে ভর করেই জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি।

  • এক, দুই, তিন, চার – এশিয়া কাপ (২০১২)

দল থেকে বাদ পড়েছিলেন, সমালোচনা তখন তুঙ্গে। এরপর তামিম জবাবটা দিলেন ব্যাট হাতে, মহাদেশীয় মঞ্চে টানা চার ম্যাচে চারটা হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন শহরে নতুন বাঘ এসেছে; ব্যাট দিয়েও যে জবাব দেয়া যায় সেটা তখনই প্রথমবার দেখেছে দেশবাসী।

  • ৯৫ বনাম স্কটল্যান্ড (২০১৫)

বিশ্বকাপে তামিমের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে বিদ্রুপ কম হয় না। কিন্তু বিশ্ব মঞ্চে তিনি প্রথম বাংলাদেশী সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন, নিজে মাইলফলক স্পর্শ করতে না পারলেও সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছিলেন যে চাইলে আমরাও পারি।

  • ৬০ বনাম ভারত (২০১৫)

মুস্তাফিজুর রহমান ভারতকে ধসিয়ে দেয়ার আগে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন তামিম, তাঁর আগ্রাসী হাফ-সেঞ্চুরিতে ভারতের আত্মবিশ্বাস তলানিতে পৌঁছে যায়। ২০১৫ সাল থেকে অবশ্য তামিম ধারাবাহিকভাবে প্রতিপক্ষের আত্মবিশ্বাস দুমড়ে মুচড়ে দেয়ার কাজটা করেছেন। সেটা হোক পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা অন্য কেউ।

  • ৭১, ৭৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া (২০১৭)

অস্ট্রেলিয়া রূপকথায় সাকিব আল হাসান উজ্জ্বলতম চরিত্র হিসেবে থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু তামিম কোন অংশে কম ছিলেন না। প্রথম ইনিংসে ৭১ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে আবারো আসে ৭৮ রান। যদিও অজি বধের কাব্যে তাঁকে নিয়ে নেই কোন উন্মাদনা।

  • ৪৯, ৮২ বনাম শ্রীলঙ্কা (২০১৭)

শততম টেস্টের মুহূর্ত বাংলাদেশ স্মরণীয় করে রাখার ক্ষেত্রে মহাগুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে এই ওপেনারের। খুব একটা আলোচিত না হলেও দেশের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্সও বলা যায়।

 

 

Share via
Copy link