সিডনিতে তখন পুরো গ্যালারি অপেক্ষায় আর একটি রানের! একটি সেঞ্চুরি, একটি রাজকীয় প্রত্যাবর্তন! জ্যাক লিচের লেগ স্টাম্পের উপর করা বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের দিকে ঠেলে দিয়েই দৌড়। সাথে সাথেই গ্যালারিজুড়ে দর্শকদের উল্লাস। তিন রান পূর্ণ করতেই ব্যাট উঁচিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তন রাজকীয় ভাবে জানান দিলেন উসমান খাজা।
খাজার বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে গ্যালারি থেকে সামিল হলেন স্ত্রী আর ছোট্ট ছেলেও। এই সেঞ্চুরিতে নিজেকে যেন আরো একবার প্রমাণ করলেন তিনি। টপ অর্ডারে মার্নাস লাবুশেন, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারদের ভীড়ে নিজের জায়গা মেলাতে না পারলেও মিডল অর্ডারে সুযোগ পেয়ে জানান দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি।
গোলাপি বলের টেস্টে প্রথম ইনিংসে অজি ব্যাটারদের ব্যর্থতার মাঝে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন খাজা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পথে ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন করলেন উসমান খাজা। ২৮ মাস পর জাতীয় দলে ফিরে আবারো নিজেকে প্রমাণ করলেন এই অজি তারকা।
সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৯ সালে। অ্যাশেজ সিরিজের মাঝ পথেই জায়গা হারান তরুন তারকা খ্যাতি পাওয়া মার্নাশ লাবুশেনের কাছে। স্টিম স্মিথের উত্তরসূরী ভাবা লাবুশেনকে টপকে আর দলে জায়গা করতে পারেননি উসমান খাজা। ঘরোয়া ক্রিকেটে দিনের পর দিন রান পেলেও জাতীয় দলের মুখ দেখতে পারেননি তিনি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে চলতি অ্যাশেজে ডাক পান। স্কোয়াডে সুযোগ পেলেও প্রথম তিন টেস্টের একাদশে সুযোগ মেলাতে পারেননি খাজা।
চতুর্থ টেস্টে সুযোগ পেলেও নিজের পছন্দের পজিশন তিনে নয়, সুযোগ পেয়েছেন পাঁচ নম্বর পজিশনে! ট্রাভিস হেড করোনা পজিটিভ হওয়ায় ভাগ্য খুলে যায় খাজার। আর হেডের পজিশনেই সুযোগ পান তিনি। সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত! পজিশনের তোয়াক্কা না করে সুযোগ লুফে নিয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দেন খাজা।
সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ চারে ২৬০ বলে ১৩৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন খাজা। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো সবশেষ ২০১৮ সালের ৬ই জানুয়ারি এই মাঠেই একই প্রতিপক্ষ ইংলিশদের বিপক্ষে অ্যাশেজ টেস্টে তিনি খেলেছিলেন ১৭১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস! ঠিক চার বছর পর একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিডনিতে অ্যাশেজেই আবারো সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এই ব্যাটার! অ্যাশেজে সিডনিতে এটি খাজার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
এই সেঞ্চুরিতে হয়তো সিরিজের শেষ টেস্টেও খেলবেন তিনি। কিন্তু হুট করেই হয়তো পরের সিরিজে আবার বাদ পড়বেন। এই সেঞ্চুরির পরেও খাজা জানেননা পরের টেস্টের একাদশে সুযোগ পাবেন কিনা। তবে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে খাজা আরো একবার নিজের সামর্থ্যের চিন্থ রেখে গেলেন সিডনিতে।