ব্রাজিলের জার্সিতে ভিনির প্রত্যাবর্তন কাব্য

রিয়াল মাদ্রিদের ডিএনএ ধারণ করা ভিনিসিয়াস আবারও লিখলেন অন্তিম লগ্নে প্রত্যাবর্তনের কাব্য। তবে এবার সফেদ জার্সিতে নয়, ব্রাজিলের হলুদিয়া জার্সি গায়ে।

রিয়াল মাদ্রিদের ডিএনএ ধারণ করা ভিনিসিয়াস আবারও লিখলেন অন্তিম লগ্নে প্রত্যাবর্তনের কাব্য। তবে এবার সফেদ জার্সিতে নয়, ব্রাজিলের হলুদিয়া জার্সি গায়ে ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। সুপার ক্ল্যাসিকোর আগে দলকে এনে দিলেন মহাগুরুত্বপূর্ণ এক জয়। ডি বক্সের বেশ বাইরে থেকে দূরপাল্লার শটে গোল আদায় করেন ভিনি।

তবে গোটা ম্যাচ জুড়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের শারীরিক সংঘর্ষেই কেটে গেছে অধিকাংশ সময়। ঘড়ির কাঁটা যখন ৭০ মিনিট পেরিয়েছে তখন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের সাথে কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিনসন সাঞ্চেজের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। ডি-বক্সের ভেতরে উড়ে আসা বলের দখল নিতে গিয়ে মাথায় আঘাত পান দু’জনে।

মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দুই দলের দুই খেলোয়াড়। যতটা দ্রুত সম্ভব মাঠে ঢুকতে বলা হল দলের ফিজিওদের। সাঞ্চেজকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। তবে শেষ অবধি তেমন ঘটনার মঞ্চায়ন না হলেও, দুই জনই বদলি হিসেবে ছেড়েছেন মাঠ।

এই একটি ঘটনাই বলে দেয় ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার মধ্যকার ম্যাচে ঠিক কি ঘটেছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে ব্রাজিলের মাঠে আবারও যেন ২০১৪ বিশ্বকাপ ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন কলম্বিয়ান খেলোয়াড়রা। বরাবর ফুটবল ময়দানে হামেস রদ্রিগেজরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। তবে গোল করার ক্ষেত্রে নয়, বরং প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে আঘাত করবার ক্ষেত্রে।

এদিনও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। লাতিন আমেরিকার দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের ছিল না বিন্দুমাত্র ছিটেফোঁটা। দুই দল স্রেফ দৌড়ে বেড়িয়েছে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। উদ্দেশ্যহীন সব আক্রমণ। কৌশলের কোন বালাই নেই, যে যার মত ছুটছে বল নিয়ে- ঠিক যেন বাংলার কর্দমাক্ত মাঠে খেলে বেড়ানো একঝাক কিশোর।

ম্যাচটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল ব্রাজিলের জন্যে। বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। তাইতো ম্যাচটা জিততেই হতো। অন্যদিকে কলম্বিয়া তুলনামূলক ভাল অবস্থানে ছিল ম্যাচ শুরুর আগে।

ব্রাজিলের কপাল এদিন অবশ্য ছিল সুপ্রসন্ন। ম্যাচের একেবারে শুরুর দিকে পেনাল্টি পেয়ে যায় সেলেসাওরা। স্পটকিক থেকে গোল করতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি ফর্মের তুঙ্গে থাকা রাফিনহা। কিন্তু শুরুর সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি অ্যালিসন বেকার ও তার দল।

লিভারপুলের কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড লুইজ দিয়াজ সমতায় ফেরান নিজ দলকে। হাফ টাইমের মিনিটে চারেক আগে গোলের ঠিকানা পেয়ে যায় দলটি। রাফিনহার গোলের পর বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে যাওয়া ব্রাজিল আবার নেমে যায় ছয় নম্বরে।

১-১ সমতাতেই খুশি ছিল কলম্বিয়া। যদিও তারা গোলের অন্বেষণ করেছে, তবে তাতে ছিল না কোন তীব্রতা। বরং তারা কালক্ষেপন করতে পারলেই যেন বেঁচে যায়। ফাউলের রীতিমত উৎসব চলেছে। মোট ৩৯টি ফাউল করেছে দুই দল। সেসব ছাপিয়ে ব্রাজিল একটা জয় পেতে ছিল ভীষণ মরিয়া, বিশেষ করে ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

জাতীয় দলে তিনি ফ্লপ, সেই তকমা তাই ঝেড়ে ফেলার সুযোগকে শতভাগ কাজে লাগালেন। নিজে গোল করে দলকে এনে দিলেন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পয়েন্ট। চিরপ্রতিদ্বন্দী আর্জেন্টিনার সাথে ম্যাচের আগে কঠিন এই জয় হতে পারে মেন্টাল বুস্টার।

 

Share via
Copy link