মাইলফলকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে কেন তাড়াহুড়া করলেন বিরাট কোহলি? কারণ, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। বোর্ডের পক্ষ থেকে যখন সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, টেস্ট দলে বিরাট আর গ্রহণ যোগ্য নন – তখন সেই হতাশায় গ্রাস হতে চাননি। দল থেকে বাদ পড়ার গ্লানি মেনে নিতে পারেননি।
চলে যাওয়াকেই সঠিক সমাধান মেনেছেন কোহলি। মে মাসের ১২ তারিখ, সোমবার। দিনটি হয়তো ক্যালেন্ডারে আর দশটা দিনের মতোই ছিল, কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এই দিন গেঁথে থাকবে কালো কালি দিয়ে। এই দিন টেস্টের সাদা প্রান্তরকে বিদায় জানালেন কোহলি, একটা বিদায়ী টেস্ট খেলারও সুযোগ মিলল না। আরেকটু সম্মান কি তাঁর প্রাপ্য ছিল না?
বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) কি কোনো জবাব দিতে পারবে? নাকি তাঁরা নিরব দর্শক? আদতে, তাঁদের কাজটাই তো সহজ করে দিলেন কোহলি। বোর্ডের, ম্যানেজমেন্টের কড়া বার্তা ছিল, ‘কোহলি এখন টেস্টে অচল!’ এই কথার পর আর থাকা যায় না! বিরাট কোহলির পক্ষে তো আরও নয়!
অথচ, কিছুদিন আগেও খবর ছিল, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজে কোহলিকে চায় বিসিসিআই। কিন্তু বাস্তবের কাহিনি যেন উল্টো দিকে ঘুরল। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, বিসিসিআই নাকি কোহলিকে সরাসরি জানিয়ে দেয়, ‘তোমাকে আর টেস্ট দলে দরকার নেই।’ একই কথা জানানো হয়েছিল রোহিত শর্মাকেও, মুম্বাইয়ে গেল সাত মে’র এক গোপন বৈঠকে।
এক বোর্ড কর্মকর্তার সাফ বলে দিয়েছেন, ‘বিসিসিআই কাউকে কিছু অনুরোধ করে না। খেলা চালিয়ে যাবে কি না, সেটা সম্পূর্ণ খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’ এই কথার গায়ে ‘নিরপেক্ষতা’র চাদর জড়ানো হলেও ভিতরে ভিতরে জমে আছে একটি স্পষ্ট বার্তা— সরে যাও। কোহলি তাই সরে গেছেন।
টেস্টের পারফরম্যান্সও তাঁর পক্ষে নেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ টেস্টে রান করেন মাত্র ১৯০। গড়: ২৩। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় ইনিংসে রান ৯৩ রান করেন মাত্র ১৫.৫০ গড়ে। পার্থের একটা সেঞ্চুরি ক্যারিয়ার বাঁচানোর জন্য যথেষ্ট হয়নি।
তাই কোনো বিদায়ী সিরিজ নয়, না কোনো আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। কেবলই এক নি:শব্দ প্রস্থান। যেন কেউ গল্পের বইয়ের মাঝখানে একটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছে।