বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে পারফরম্যান্স আর দলের শক্তিমত্তায় নি:সন্দেহে সবচেয়ে সেরা দল ভারত। ভারতের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আর তিন ফরম্যাটেই সফলতার অন্যতম দু’টি কারণ তাদের অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী। তাঁদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা আর দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে জয়ের জন্য মানসিকতা তৈরিতে বেশ সফলও হয়েছেন।
তবে, ভারতের এই লম্বা সাফল্যের কান্ডারি হিসেবে অনেকেই শুধু রবি শাস্ত্রীর নাম নেন। এর মধ্যে আছেন সাবেক ইংলিশ স্পিনার মন্টি পানেসারও। তাঁর মতে ভারতের এই সাফল্যের পিছনে বিরাট কোহলির চেয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রবি শাস্ত্রীর।
সাবেক বাঁ-হাতি এই স্পিনার মনে করেন শাস্ত্রী ভারতীয় দলে আত্মবিশ্বাসের একটা বড় জায়গা তৈরি করেছেন খেলোয়াড়দের মধ্যে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কৃতিত্ব রবি শাস্ত্রীকেই দিয়েছেন এই স্পিনার।
এক সাক্ষাৎকারে পানেসার বলেন, ‘গত কয়েক মাসের পারফরম্যান্স যদি বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে আপনি দেখবেন যে এটা বিরাটের চেয়ে বেশি রবি শাস্ত্রীর দল। অন্তত আমি এটা মনে করি। রবি শাস্ত্রী দলের মধ্যে সবার আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। ৩৬ রানে অলআউটের মতো লজ্জাজনক ইনিংসের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তারা যে অর্জন করেছে সেটা এক প্রকার মিরাকল। বিরাট কোহলি সিরিজের বাকি অংশ না খেলার পরেও তারা সিরিজ জিতেছে, দলে বেশ কিছু ইনজুরিও ছিলো! এটা সত্যি মিরাকল। আমি মনে করি রবি শাস্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের মাটিতেই জয়ের পিছনের সবচেয়ে বড় কারিগর।’
২০১৭ সালে অনিল কুম্বলের পরিবর্তে দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতয়ি জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান রবি শাস্ত্রী। মূলত দীর্ঘদিন ধরেই অনিল কুম্বলেকে নিয়ে বেশ কিছু খবর উড়ছিলো যে জাতীয় দলের অনেক সিনিয়র ক্রিকেটারই কোচ হিসেবে অনিল কুম্বলেকে চান না।
এমনকি তখন বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হয় বিরাট কোহলির সাথে অনিল কুম্বলের দ্বন্দ্ব আছে! এবং অনিল কুম্বলেকে কোচ হিসেবে মানতে চান না বিরাট। সে জন্য সাফল্য থাকার পরও সরে যেতে হয় কুম্বলেকে।
অবশ্য এর কিছুদিন পরেই ভারতের প্রধান কোচের জন্য আবেদন নেওয়া হয়। সেই আবেদনের মধ্যে থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে রবি শাস্ত্রীকে ভারতের পরবর্তী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে, তাঁর নিয়োগ পাওয়াটা মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। কারণ, কোহলি ও দলের সিনিয়রদের প্রিয় পাত্র ছিলেন এই শাস্ত্রী। কারণ, শাস্ত্রীর সাথে এই দলের নেতৃত্বস্থানীয় অংশের দারুণ সুসম্পর্ক। ফলে, কাজটা সহজ হয়ে যায়। পরিকল্পনায় কোনো দ্বিমত থাকে না।
মূলত ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার সাথে চুক্তি করা হয় পরবর্তীতে ১৬ আগস্ট ২০১৯ সালে মেয়াদ বাড়িয়ে তা ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
আসন্ন ১৮ জুন সাউদাম্পটনে রবি শাস্ত্রীর দল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে। রবি শাস্ত্রী কি তার কোচিং ক্যারিয়ারে আরেকটি সাফল্যে ঝুলিতে নিতে পারবেন কিনা সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।