জয়ের সুবাসের পাশে ছোট্ট শঙ্কা

প্রথম ইনিংসে উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি সাদমান ইসলাম অনিক। আর শূন্য হাতে ফিরে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ভুল করেননি কেউই। সাদমান ও শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতেই হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ৪৭৭ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিন শেষে লক্ষ্য থেকে এখনো ৩৩৭ রান দূরে রয়েছে জিম্বাবুয়ে; হাতে রয়েছে মাত্র সাত উইকেট। চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ৩৩১ রানের বেশি করতে পারেনি কখনোই। চতুর্থ ইনিংসে ১৬২ রানের বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ডও নেই জিম্বাবুয়ের। তাই হারারে টেস্টে চতুর্থ দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। আবার শঙ্কাও আছে সামান্য। কারণ, ক’দিন আগেই বাংলাদেশের মাটিতে এমনই অবস্থা থেকে কাইল মেয়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে টেস্ট জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল।

যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্রেন্ডন টেইলরের ব্যাটে অনায়াসেই এগিয়ে যাচ্ছিলো জিম্বাবুয়ে। তবে প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি মিস করেছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। ৭৩ বলে ৯২ রান করা টেইলরকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

টেইলরের বিদায়ের পর দেয়াল হয়ে থাকা তাকুজওয়ানাশে কাইতানোকে ফিরিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। কাইতানো করেন ১০২ বলে ৭ রান। চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান সংগ্রহ করেছে স্বাগতিকরা। ডিয়ন মেয়ার্স ১৮ রানে ও ডোনাল্ড টিরিপানো ৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন।

তবে ৪৭৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। তাসকিন আহমেদের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ইয়াসির আলী রাব্বির হাতে ক্যাচ দিয়ে ১১ রান করে ফিরে যান ওপেনার মিল্টন শুম্বা। বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ।

এরআগে গতকালের ৪৫ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে আজও ভালোই শুরু করেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেনি এই জুটি। কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ৪৩ রান করে সাইফ ফিরে গেলে ভাঙে ৬১ রানের জুটি। এই ওপেনারের বিদায়ের পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশের।

পরের গল্পটা শুধুই সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্তর। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৯৬ রান যোগ করেন দুজন। দুজন সেঞ্চুরি করার পরই ১ উইকেটে ২৮৪ রানে ইনিংস ঘোষণা  করে বাংলাদেশ। ১৯৬ বলে ১১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন সাদমান। আর ওয়ানডে স্টাইলে ১১৮ বলে ১১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন শান্ত।

সাদমানের ইনিংসে শুধু নয়টি চার থাকলেও শান্তর ইনিংসে পাঁচটি চারের সাথে ছিল ছয়টি ছয়। সর্বশেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলার পরের চার ইনিংসে মাত্র ২৮ রান এসেছিল শান্তর ব্যাট থেকে। পাঁচ বার যেতে পারেননি দুই অংকের ঘরে। যার ভিতর শূন্য রানেই ফিরে ছিলেন দুই বার।

ঘরের মাঠে গত জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে হাফ সেঞ্চুরি করার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাইফ হাসানের কাছে জায়গা হারিয়ে ছিলেন সাদমান। তামিমের চোটে সুযোগ পেয়ে ছিলেন এই টেস্টে। তাই এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জ ছিল দুই জনেরই।

শান্তর রান করা প্রয়োজন ছিল নিজের বাদ পড়ার পথ বন্ধ করার। আর সাদমানের লক্ষ্য ছিল নিজের ফিরে পাওয়া জায়গা শক্ত করা। নিজেদের কাজটা এই ইনিংসে দারুণ ভাবে করেছেন দুজনই। দুজনই নিশ্চিত করে দিলেন আপাতত তাদের টেস্ট দলের বাইরে রাখা যাবে না।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চতুর্থ দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৬৮/১০ (ওভার: ১২৬; সাদমান- ২৩, সাইফ- ০, শান্ত- ২, মুমিনুল- ৭০, মুশফিকুর- ১১, সাকিব- ৩, মাহমুদউল্লাহ- ১৫০*, লিটন- ৯৫, মিরাজ- ০, তাসকিন- ৭৫) (মুজারাবানি- ২৯-৪-৯৪-৪, নিয়াউচি- ১৭-১-৯১-২, টিরিপানো- ২৩-৫-৫৮-২)

ও দ্বিতীয় ইনিংস: ২৮৪/১ (ডি.) (ওভার: ৬৭.৪; সাইফ- ৪৩, সাদমান- ১১১*, শান্ত- ১১৭*) (নিয়াউচি- ৯-০-৩৬-১)

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৭৬/১০ (ওভার: ১১১.৫; শুম্বা- ৪১, কাইতানো- ৮৭, টেইলর- ৮১, মেয়ার্স- ২৭, চাকাভা- ৩১) (সাকিব- ৩৪.৫-১০-৮২-৪, মিরাজ- ৩১-৫-৮২-৫, তাসকিন- ২৪-১০-৪৬-১)

ও দ্বিতীয় ইনিংস: ১৪০/৩ (ওভার: ৪০; টেইলর- ৯২, শুম্বা- ১১, কাইতানো- ৭, মেয়ার্স- ১৮*, টিরিপানো- ৭*) (সাকিব- ১২-৪-২৩-১, মিরাজ- ১৪-২-৪৫-১, তাসকিন- ৭-০-৩৯-১)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link