১৯৯৯ সালের ঐতিহাসিক সন্ধ্যায় ফুটবল বিশ্ব দেখেছিল এক অনন্য দ্বৈরথ—বার্সেলোনার শতবর্ষ উদযাপনে মুখোমুখি হয়েছিল ক্লাব বার্সেলোনা ও বিশ্বজয়ী ব্রাজিল জাতীয় দল।
ক্যাম্প ন্যুর গ্যালারি তখন কানায় কানায় পূর্ণ। দর্শকেরা জানতেন, মাঠে নামছেন রোনালদো, রিভালদো, রোমারিও, ফিগো, গার্দিওলা, লুইস এনরিকের মতো—ফুটবল বিশ্বের সব মেগাস্টাররা।
বার্সেলোনার কোচ তখন লুইস ফন গাল। অভিজ্ঞ এই ডাচ কোচ মাঠে নামিয়েছিলেন এক তারকাখচিত একাদশ—প্যাট্রিক ক্লাইভার্ট, ফিগো, এনরিকে, গার্দিওলা, কোকুর মতো তারকারা শুরু থেকেই খেলেছেন।
অন্যদিকে, ব্রাজিলের প্রথম একাদশেও ছিল রোনালদো, রিভালদো, রোমারিও, রবার্তো কার্লোসের মতো নাম। রোনালদো তখন ইন্টার মিলানের খেলোয়াড়। খেলায় শুরুতেই ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন তিনিই। বক্সে ঢুকে বার্সার গোলরক্ষক রুড হেস্পকে পরাস্ত করেন এক কৌশলী ফিনিশিংয়ে।
তবে প্রতিউত্তরের জন্য বেশি সময় নেননি লুইস এনরিকে। কাছ থেকে ভলিতে দুর্দান্ত এক গোল করে বার্সাকে সমতায় ফেরান তিনি। এরপর দেখা যায়, বার্সেলোনারই তারকা রিভালদো ব্রাজিলের হয়ে গোল করছেন—বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে দৃষ্টিনন্দন এক শটে আবারও লিড এনে দেন সেলেসাওদের।
শেষে গোল কিপারের বড় ভুলে ম্যাচে ফেরে বার্সা। ফিগোর নেওয়া ফ্রি-কিক ঠিকমতো ধরতে পারেননি ব্রাজিল গোলকিপার রজেরিও সেনি, ফিরতি বলে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি কোকু। ম্যাচ শেষ হয় ২-২ গোলে।
গোলের চেয়েও বড় ঘটনা ছিল ম্যাচের রসায়ন। একদিকে জাতীয় দলের গর্ব, অন্যদিকে ক্লাব ফুটবলের গৌরব। খেলা শেষে রোনালদো ও ফিগোর জার্সি বদলের দৃশ্য ছিল স্মরণীয়—পরবর্তীতে দু’জনই একসঙ্গে খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গ্যালাকটিকোস স্কোয়াডে।
এমন ম্যাচ সচরাচর দেখা যায় না ফুটবল বিশ্বে, তবে ইতিহাসে এমন নজির আরও রয়েছে। ইংল্যান্ড একবার খেলেছিল টটেনহ্যামের বিপক্ষে, আর্সেনাল খেলেছে ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য ফুটবলের এই অমিমাংসিত দৈরথ আর দেখা যায়।
তবুও একবার কল্পনা করুণ মাঠে খেলছে—রিয়াল মাদ্রিদ বনাম ফ্রান্স, বার্সা বনাম আর্জেন্টিনা কিংবা বায়ার্ন বনাম জার্মানি। এমন রোমাঞ্চকর লড়াই দেখে গ্যালারি থেকে ভেসে আসছে দর্শকদের উল্লাসধ্বনি!