যেভাবে চলছে-চলবে বিসিসির অন্দরমহল

অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পুরো দেশেই বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। এর মধ্যে বিসিবি-তেও পরিবর্তন আসা অবধারিত কিংবা অবশ্যম্ভাবী। তবে এর আগেই বোর্ডের অধিকাংশ কর্তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। এমনকি বোর্ড প্রধান নাজমুল হোসেন পাপন ছেড়েছেন দেশ।

একেবারের নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় রয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেট। পরিচালনা পর্ষদের প্রায় ২৫ জন সদস্য়ের নেই কোন খোঁজ। তারা হোম অব ক্রিকেটেও রাখছেন না পা। এমন পরিস্থিতিতে খানিকটা দুশ্চিন্তার উদ্রেক ঘটেছে চারিদিকে। এমন নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় ঠিক কতদিন চলবে বাংলাদেশের ক্রিকেট?- এমন প্রশ্নও উঠছে নানা মহলে।

বিগত সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ না থাকলেও পরিচালনা পর্ষদের অধিকাংশই যুক্ত ছিলেন সাবেক ক্ষমতাসীন দলের সাথে। ক্ষমতার পালাবদলে তারাও যেন ভীত। তবে তারা যদি সত্যিকার অর্থেই দায়িত্ববান হতেন, তবে আসতেন বিসিবি প্রাঙ্গণে- এমন মত দিয়েছেন দেশ নন্দিত কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

তিনি বলেন, ‘তারা যদি ক্রিকেটের সত্যিকার অর্থেই সেবক হতেন, তাহলে কিন্তু আসতেন। আমার মনে হয় না তারা ক্রিকেটের সেবক ছিলেন। তাদের নিজস্ব এজেন্ডা ছিল। সে এজেন্ডাই তারা বাস্তবায়ন করেছেন।’

এর সত্য-মিথ্যা অবশ্য তারাই ভাল বলতে পারবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বিসিবি-এর এই নেতৃত্ব সংকট কাটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। তবে সেক্ষেত্রে সরকার সরাসরি কোন হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কেননা তাতে করে লঙ্ঘন করা হবে আইসিসির বিধি-নিষেধ। তেমনটা হলে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক কারণে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে।

তাছাড়া অক্টোবরে বাংলাদেশের মাটিতে আয়োজিত হওয়ার কথা নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। শঙ্কা জেগেছে সে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়েও। যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা বলেছেন তেমন কিছু ঘটবে না।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জানিয়েছেন, এই টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের বাইরে যাবে না। দেশের এমন ক্রান্তি-লগ্নে এমন বৈশ্বিক আয়োজন হাতছাড়া হওয়া দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। সে কারণেই সরকার মহল থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিসিবির সভাপতি যেহেতু অনুপস্থিত আছেন, তাই আমরা বিসিবির যারা পরিচালক আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আইসিসির আইন মেনে যেটা করার, সেটাই করবেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা সেই বিষয়টিও দেখতে বলেছি।’

এই মুহূর্তে বিসিবি চলছে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে। পেশাজীবী কর্মকর্তাদের সহয়তা করছেন দুই-তিনজন সক্রিয় বোর্ড পরিচালকরা। এমন পরিস্থিতিতে আইসিসির পরামর্শ গ্রহণ করা ছাড়া দ্বিতীয় কোন বিকল্প খোলা নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সামনে। আইসিসি দিক নির্দেশনা মেনে একটা অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন করাই এখন মুখ্য কাজ।

সেই পর্ষদের মূল কাজই হবে অনতিবিলম্বে বোর্ড নির্বাচন আয়োজন করা। কেবল তবেই পরিচালনা পর্ষদের এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ততদিন অবধি পেশাজীবী কর্মকর্তারাই ভরসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link