প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কেবল ব্যাটিংটাই করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। সেটাও মোটে ১৩ ওভার। সেখানে অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটাররা খুব ইতিবাচক কিছু করে দেখাতে পারেননি।
তবে, একটা ব্যাপার ঠিক যে টপ অর্ডারের অ্যাপ্রোচটা ছিল চোখে পড়ার কত। কতদিন বাদে বাংলাদেশের ব্যাটাররা প্রথম পাওয়ার প্লে থেকে ৫০ ছুঁইছুই রান করতে পারলো, সেটা করতে রীতিমত পরিসংখ্যানও ঘাটতে হল।
রহস্যটা কি? ম্যাচের আগেই নির্বাচক প্যানেলের একজন, মানে হাবিবুল বাশার সুমন বলে গিয়েছিলেন, টপ অর্ডার বিশেষ করে ওপেনারদের লাইসেন্স দিয়েই মাঠে পাঠানো হয়েছে। ওরা ব্যর্থ হলেও সমস্যা নেই।
এই লাইসেন্সের অর্থ কী? অর্থ হল, তোমার তুলে মারতে গিয়ে, মাত্রাতিরিক্ত শট খেলতে গিয়ে আউট হলেও পরোয়া নেই। সামনের ম্যাচেও তোমাদের সামনে সুযোগ থাকছে। সেটাই করেছিলেন দুই ওপেনার।
দুই ওপেনার ছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। মুনিম মারতে গিয়েছিলেন, পারেননি। তিন বলে দুই রান করে আকিল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেছেন।
তবে, একটু তুলনামূলক ভাল অবস্থানে ছিলেন এনামুল হক বিজয়। অনেক দিন পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে বেশ মারকুটে ব্যাটিংই করেছেন। তাতে ৯ বলে ১৬ রান করেছেন। দলের রানের চাকা সচল রেখেছেন। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সাথে একটা জুটি গড়ে ম্যাচে বাংলাদেশের অবস্থান অক্ষুন্ন রেখেছেন।
কিন্তু, তাতে ফায়দা কি হল? ফায়দা হল আবারও ওপেনিং জুটিটা ভাঙাই হল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নতুন এক ওপেনিং জুটি নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আবারও। তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি থেকে কার্যত অবসর নেওয়ার পর থেকে এই নিয়ে দশমবারের মত ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনল বাংলাদেশ দল।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ওপেনিং পজিশনটা নিয়ে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট এখন স্রেফ ছেলেখেলাই করছে। যে মুনিমকে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির নেক্সট বিগ থিঙ ভাবা হচ্ছে, এবার তাঁকেই বাদ দেওয়া হল একাদশ থেকে।
অথচ, একদিন আগেই দেশের সাবেক অধিনায়ক, ও নির্বাচক প্যানেলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাজশাহীতে বসে বললেন, তাঁদের লাইসেন্স দেওয়া হবে। প্রশ্ন হল, এই লাইসেন্সের মেয়াদ তাহলে একদিন? নাকি লাইসেন্সের অর্থই ঠিক মত জানা নেই টিম ম্যানেজমেন্টের।
হ্যাঁ, একটা ব্যাপার ঠিক যে দেশে বসে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনের পরিস্থিতি ও দলীয় পরিকল্পনার ব্যাপারে পুরোপুরি ধারণা হাবিবুল বাশারের পক্ষে রাখা সম্ভব না। কিন্তু, তিনি যেটা বলেছেন সেটা দলের সার্বিক পরিকল্পনারই যে অংশ ছিল – সেটা তাঁর বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে কথাটা বলা থেকেই বোঝা যায়।
হ্যাঁ, হতে পারে মুুনিমের ইনজুরিজনিত সমস্যাও আছে। গুঞ্জন আছে তাঁর পিঠে ব্যাথা। সেটা হলে ঠিক আছে। কিন্তু, যদি এটা স্রেফ গুজবই হয় – তাহলে টিম ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলের পরিকল্পনা নিয়ে কোনো ইতিবাচক বার্তা বহন করে না। একই সাথে এটা এক রকমের প্রতারণাও!
তার ওপর মুনিমের জায়গায় খেলানো হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। এই সৈকতের টি-টোয়েন্টি সক্ষমতাও যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। মুনিম হয়তো সবদিন চাহিদামাফিক রান করবেন না, কিন্তু তিনি বল নষ্ট করবেন না। ভয় আছে, সেটা মোসাদ্দেক করতে পারেন। তবুও কেন এই সিদ্ধান্ত? উত্তরটা টিম ম্যানেজমেন্টই ভাল দিতে পারবে!