ক্রিকেট ইতিহাসে আমরা সাক্ষী হয়েছি বিভিন্ন তারকা ক্রিকেটারদের দেখার, মাঠে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র। বহু অদ্ভুত নামের ক্রিকেটারও আছে ইতিহাসে; যাদের নামের সাথে বিভিন্ন পেশা কিংবা বস্তুর নামের মিল আছে। তেমনি আজকে আমরা আলোচনা করবো এমন কিছু ক্রিকেটারদের নিয়ে যাদেরকে বিশেষ কিছু কারণে ভিন্ন নাম দেওয়া হয়। আর সেই নামগুলোই পরবর্তীতে ক্রিকেট পাড়ায় বেশ পরিচিতি লাভ করে।
- মাইকেল হোল্ডিং – হুইসপারিং ডেথ
ক্যারিবিয়ান তারকা পেসার মাইকেল হোল্ডিং নিঃশব্দে দৌড়ে যেতেন এবং বল ডেলিভারির সময় খুব কদাচিৎ শব্দ করতেন! বল ডেলিভারির আগে ক্রিজে পৌঁছানো পর্যন্ত কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় আম্পায়ার ডিকি বার্ড হোল্ডিংয়ের নাম রেখেছিলেন ‘হুইসপারিং ডেথ’।
- গ্লেন ম্যাকগ্রা – পিজিয়ন
গায়ের গড়ন বেশ পাতলা হবার কারণেই পিজিয়ন আখ্যা পেয়েছিলেন অজি পেসার গ্লেন ম্যাগ্রা। চিকন ও লম্বা পায়ের জন্য তাঁর সতীর্থরা এই নাম দিয়েছিলেন। পিজিয়ন অর্থ হল কবুতর।
- অনিল কুম্বলে – জাম্বো
অনিল কুম্বলের বেশিরভাগ ডেলিভারি অতিরিক্ত বাউন্সের সাথে সাথে বল পিচে স্কিড করতো। বলের গতিকে জাম্বো জেটের সাথে তুলনা করেই তাঁকে ডাকা হতো জাম্বো নামে। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত কুম্বলের অতিরিক্ত বাউন্সের বিপাকে পড়তেন ব্যাটাররা।
- স্টিভ ওয়াহ – টাগ্গা
মাঠে সাহসী সিদ্ধান্ত আর চাপের মুহূর্তে শান্ত থাকার কারণে সাবেক অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহকে ‘টাগ্গা’ নামে ডাকা হতো।
- সাকিব আল হাসান – ময়না
সাকিব তখন কেবল বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছেন। একদিন নাঈম ইসলাম (বিকেএসপির সিনিয়র) তাঁকে দেখে বললেন, ‘আরে এটা তো ময়না পাখির মত কথা বলে!’ সেদিন থেকে সাকিবের ডাক নাম ময়না!
- বিরাট কোহলি – চিকু
ক্যারিয়ারে বেশ অল্প সময়েই চিকু নাম উপাধি পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দিল্লির কোচ অজিত চৌধুরী তাঁর স্পাইকি চুলের স্টাইল দেখেই মূলত এই নাম দেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রায় লম্বা সময় ধরে স্পাইকি চুলের স্টাইল রাখেন বিরাট।
- সৌরভ গাঙ্গুলি – দাদা
দাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি দাদা হিসেবেই বেশ পরিচিত। বাংলা ভাষায় দাদা মানে বড় ভাই। তাঁর সতীর্থরা জাতীয় দলে খেলাকালীন সময় থেকেই তাঁকে দাদা নামে ডাকতেন। সেখান থেকেই ভক্তরা পরবর্তীতে দাদা নামে ডাকা শুরু করেন।
- রাহুল দ্রাবিড় – দ্য ওয়াল
ক্রিকেট পাড়ায় দ্য ওয়াল নামেই খ্যাত সাবেক ভারতীয় তারকা রাহুল দ্রাবিড়। টেস্টে ঘন্টার পর পর ঘন্টা ক্রিজে টিকে থাকতেন এই ব্যাটার। সহজে বোল্ড কিংবা লেগ বিফোর আউট হতেন না তিনি। যার কারণে সতীর্থরা তাঁকে দ্য ওয়াল আখ্যা দেয়।
- শহীদ আফ্রিদি – বুম বুম
মাঠে ব্যাট হাতে আফ্রিদি বরাবরই ছিলেন আগ্রাসী ভূমিকায়। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে কম বল খেলেই বেশি রান তুলতে ব্যস্ত থাকতেন তিনি। বিগ হিটিং অ্যবিলিটির কারণেই তাঁকে নাম দেওয়া হয় বুম বুম।
- ইয়ান বোথাম – বিফি
শারীরিক গড়ন, পেশিবহুল কাঁধের কারণে সতীর্থদের কাছে বিফি উপাধি পান সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম। তাঁর ফ্রেমের কারণেই তাঁকে এই নাম দেওয়া হয়।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি – ক্যপ্টেন কুল
সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ক্যাপ্টেন কুল হিসেবেই জানে পুরো ক্রিকেট দুনিয়া। চাপের মূহুর্তেও দলকে নিজের বিচক্ষণ নেতৃত্ব দিয়ে জয় এনে দিয়েছেন বহুবার। যেকোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার কারণে ক্রিকেট বিজ্ঞরা তাঁকে ক্যাপ্টেন কুল আখ্যা দেন।
- শিখর ধাওয়ান – গাব্বার
বলিউডের বিখ্যাত মুভি শোলের চরিত্র গাব্বার থেকেই গাব্বার উপাধি পান ভারতের ড্যাশিং ওপেনার শিখর ধাওয়ান। গাব্বারের মতো গোফ রাখার কারণে তাঁকে ডাকা হয় এই নামে। অবশ্য তিনি নিজেও তাতে সায় দিয়েছেন।
- রোহিত শর্মা – হিটম্যান
ওয়ানডেতে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিনবার ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ভারতের তারকা ওপেনার রোহিত শর্মা। রোহিত যখনই ব্যাট করতে নামেন যেন তিনি বোলারদের উপর ‘হিটম্যানের’ উপর চড়াও হবেন। যার কারণেই তাঁকে হিটম্যান নাম দেওয়া হয়।