মিরাজের দোষটা কী!

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের প্রথম ম্যাচটা হেরেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে পরের দুই ম্যাচেই দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। বেশ প্রশংসা পাচ্ছিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও। ব্যাট, বলে পারফর্মেন্স করে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তবে হঠাৎই বিপিএলের মাঝপথে অধিনায়ক পরিবর্তন করলো চট্টগ্রাম। আজ থেকে দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাঈম ইসলাম।

একসময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক ভাবা হতো মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাঁর নেতৃত্বেই প্রথম অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। তখন আমরা মিরাজকে জানতাম ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে। সেই বিশ্বকাপেও অলরাউন্ড পারফর্ম করেছিলেন। তবে জাতীয় দলে আসার পর থেকে তাঁর সেই পরিচয়টা আর সামনে আসতো না।

ব্যাটসম্যান মিরাজকে বাংলাদেশ সেভাবে কখনো ব্যবহারই করেনি। তবুও আট নম্বরে নেমে টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটেও নিচের দিকে নিজের ব্যাটিং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে গত কয়েকবছরে মিরাজ মূলত বনে গিয়েছিলেন একজন স্পিনার। তবে নিজের পুরনো সত্তাটাকে আবার ফিরে পাওয়ার একটা মঞ্চ খুঁজে পেয়েছিলেন মিরাজ।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ব্যাটিং করছিলেন ৫ নম্বরে। নিয়মিত রানও করতে পারছিলেন। এছাড়া বল হাতে বরাবরই ভালো করে যাচ্ছেন। ওদিকে অধিনায়ক মিরাজও বেশ প্রশংসিত হচ্ছিল। তাঁর নেতৃত্বে গুছানো ক্রিকেটই খেলছি চট্টগ্রাম। তবে এর মাঝেই অদ্ভুত এক কারণে মিরাজের কাছ থেকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব কেড়ে নেয়া হল।

নতুন অধিনায়ক হিসেবে দলটি ঘোষণা করেছে নাঈম ইসলামের নাম। নাঈমও শেষের দিকে ভালো ব্যাটিং করছিলেন। তবে মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার মত কোনও ভুলও করেননি। ওদিকে দলটির হেড কোচ পল নিক্সনও হঠাত করেই আজ চলে যাচ্ছেন। জানা যায় কাউন্টি দল লিস্টাশায়ারের কাছ থেকে ইমার্জেন্সি ডাক এসেছে এই কোচের। ২০১৭ সাল থেকেই দলটির কোচিং করান পল নিক্সন।

তবে মিরাজকে সরানোর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন দলটির ম্যানেজার ফাহিম মুনতাসির। পল নিক্সনের চলে যাওয়া ও মিরাজের প্রসঙ্গে ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে তিনি বলেন, ‘আমাদের সাথে নিক্সনের পুরো মৌসুমের কন্ট্রাক্টই ছিল। তবে কাউন্টি থেকে তাঁর জরুরি ডাক আসায় চলে যেতে হয়। তবে যাওয়ার আগে দলের ব্যাপারে সে তাঁর মতামত জানিয়ে গেছে। আমরা সেভাবেই দলে পরিবর্তন এনেছি। মিরাজের অলরাউন্ডিং পারফর্মেন্স পাওয়ার জন্যই তাঁকে চাপমুক্ত করার কথা বলেছিলেন পল নিক্সন। সেজন্যই আমরা নাঈম ইসলামকে অধিনায়ক হিসেবে নিয়ে এসেছি।’

যদিও নিজেদের কথার সাথে কাজে মিল দেখা যায়নি। মিরাজের ব্যাটিং সার্ভিস পাওয়ার ব্যাপারে আজ আগ্রহ দেখায়নি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এতদিন পাঁচ নম্বরে নামলেও আজ তাঁকে নামানো হয় সাত নম্বরে। যদিও সাতে নেমেই ২ ছয়ে চার বলে ১৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন মিরাজ। ফলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে দেয়া ব্যাখায় একটা কিন্তু থেকেই যায়।

ওদিকে পল নিক্সন চলে যাওয়ায় হেড কোচের জায়গাটাও ফাকা হয়ে গিয়েছে। এই দায়িত্বটা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স তুলে দিতে চায় এখন বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করা শন টেইটের কাঁধে। এ ব্যাপারে দলটির চিফ অপারেশন অফিসার বলেন বলেন, ‘নিক্সন যেহেতু চলে গিইয়েছেন ফলে এখন শন টেইট প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া যাওয়ার আগে নিক্সনের দেয়া পরামর্শেই আমরা মিরাজকে আর অধিনায়ক রাখিনি। তাঁকে আমরা স্বাধীন ভাবে খেলতে দিতে চাই।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link