পার্থের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে মহাকাব্যের লেখক

যদিও সেই সিরিজের তৃতীয় টেস্টেই ১৪৮ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন এই মহারথী। তবে ম্যাচ সিচুয়েশন আর পিচ বিবেচনায় পার্থ টেস্টের কীর্তি স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসের উপরের দিকে।

একজন ব্যাটারের শ্রেষ্ঠত্ব মাপার সবচেয়ে বড় মাপকাঠি বোধহয় প্রতিকূল কন্ডিশনে তাঁর পারফরম্যান্স। আর এই মাপকাঠিতে লেটার মার্কস সহ পাশ করেছেন ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার। অস্ট্রেলিয়ার পেস স্বর্গে তিনি যেভাবে রান করেছেন সেটা এখনও বিস্ময় হয়েই আছে। সম্ভবত ক্রিকেটের আইকনিক একটা অধ্যায় হয়ে আছে অজিদের ডেরায় শচীনের বীরত্ব।

বীরত্বের একটা গল্প আছে ১৯৯১ সালের পার্থ টেস্টে, ততদিনে ওয়ান্ডার কিড হিসেবে খ্যাতি পেয়ে গিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটার। আগের বছর ম্যানচেস্টারে তিনি ইংল্যান্ডের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। তাই তো অস্ট্রেলিয়া আলাদা পরিকল্পনা করেছিল তাঁকে নিয়ে, কিন্তু বুড়ো আঙুল দেখাতে ভুল হয়নি তাঁর।

সিরিজের পঞ্চম টেস্টে এই ডান-হাতি যখন ব্যাট করতে আসেন দলের রান তখন দুই উইকেটে ৬৯। পৃথিবীর সবচেয়ে বাউন্সি উইকেটে দাঁড়িয়ে এরপর তিনি যা করলেন সেটা অতিমানবীয় বটে। ক্রেইথ ম্যাকডারমট, মার্ভ হিউজেস, পল রেইফেল, টম মুডিদের নিয়ে গড়া বোলিং লাইনআপ সেদিন অসহায় হয়ে পড়েছিল তাঁর সামনে – কাট, পুল আর হুক শটের অনবদ্য প্রদর্শনীতে সেঞ্চুরি উদযাপন করতে দেখা যায় তাঁকে।

বাকিদের মাঝে মাত্র চারজন দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছুতে পেরেছিলেন; রীতিমতো ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে শচীন ব্যাট করেছিলেন সেটা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। তিনি যে ক্রিকেট রাজ্যে রাজত্ব করতে এসেছেন সেটার আরেকটি নিদর্শন দেখা গিয়েছিল বটে।

অবশ্য একক বীরত্বে অলৌকিক কিছু করতে পারেননি এই তারকা, ৩০০ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে তাঁর ১১৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস জায়গা করে নিয়েছে দর্শকদের হৃদয়ে, এখনও সমর্থকেরা নস্টালজিয়ায় ভোগে সেদিনের ব্যাটিং কল্পনা করে।

যদিও সেই সিরিজের তৃতীয় টেস্টেই ১৪৮ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন এই মহারথী। তবে ম্যাচ সিচুয়েশন আর পিচ বিবেচনায় পার্থ টেস্টের কীর্তি স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসের উপরের দিকে।

Share via
Copy link