মাত্র ১৭ বছর বয়সে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে ডাক এসেছে এক কিশোর ফুটবলারের। বা-পায়ের নতুন উত্তরসূরী। তবে কি তিনি হতে চলেছেন আলবিসেলেস্তাদের নতুন লিওনেল মেসি? না, ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুনো মেসি হয়ত হবেন না। তবে ডি মারিয়ার একটা প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠতে হয়ত পারবেন তিনি।
মাত্র ১৭ বছর বয়স, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের স্কোয়াডে জায়গা হচ্ছে রিভারপ্লেটের তরুণ ফুটবলার ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুনোর। লিওনেল স্কালোনি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্যে তাকে ডেকেছেন জাতীয় দলের স্কোয়াডে। কে এই মাস্তান্তুনো? কেনই বা এত দ্রুত জাতীয় দল থেকে তার ডাক আসল?
আর্জেন্টিনার আজুলে জন্মেছেন মাস্তান্তুনো। আর্জেন্টিনার ঘরোয়া লিগের ক্লাব রিভারপ্লেটের বয়স ভিত্তিক দল থেকে উঠে আসা তার। গেল বছরের শুরুতে মূল দলে অভিষেক হয় মাস্তান্তুনোর। এর পর থেকেই আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবল সার্কিটে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
তিনি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হলেও, তার খেলার ধরণ খানিকটা উইংগারদের মত। পায়ে বল রাখতে পছন্দ করেন। বা-পায়ের কারিকুরিতে ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে দিতে পারেন অনায়াসে। যদিও এখনও সেই অর্থে পরিপক্কতা আসেনি তার। দূর্বলতা রয়েছে অনেক। যার মধ্যে অন্যতম দূর্বল শট। তিনি বা-পায়ের শটগুলোতে খুব একটা শক্তি সঞ্চার করতে পারেন না।
এছাড়া ডান পা প্রায় অচলই বলা চলে। নানারকম কারিকুরি দেখানোর ক্ষেত্রে তার বাম পা-কেই ভরসা করেন বেশি। এছাড়াও গতির ঘাটতি রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে এসব নিশ্চয়ই কাটিয়ে উঠবেন তিনি। কিন্তু এমন দূর্বলতা থাকার পরও কেন তাকে দলে নিয়েছেন স্কালোনি? এমন একটা প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
সেই প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে মাস্তান্তুনোর ফুটবল মস্তিষ্ক। চাপের মুহূর্তেও দারুণ সব সিদ্ধান্ত চট করে নিতে পারেন মাস্তান্তুনো। কখন বল ছেড়ে দিতে হবে, কতক্ষণ নিজের পায়ে বল আটকে রাখা যাবে সেসব সিদ্ধান্ত চোখের পলকে নিতে পারেন তিনি।
পাশাপাশি কোন খেলোয়াড় খুঁজে নেওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ পারদর্শী তিনি। তাছাড়া বলের উপর তার দারুন নিয়ন্ত্রণও রয়েছে। জটলার মধ্যেও বল দখলে রাখতে পারেন অনায়াসে। এই গুনাবলির কারণেই তাকে স্কালোনির মনে ধরে।
আর্জেন্টিনার রাইট উইংয়ে একটা দীর্ঘ সময় ধরে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লিওনেল মেসির মত বা-পায়ের জাদুকরদের আনাগোনা ছিল। সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই তো বদলে যায়। তাইতো ভবিষ্যতের ভাবনা থেকেই ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুনোকে জাতীয় দলের ডেরায় নিয়ে আসতে চাইছেন স্কালোনি।
তিনি হয়ত খুব একটা বেশি সময় খেলার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্টিনেজদের ছায়াতলে তার যে শেখার আছে অনেক কিছু। তরুণ তবে পরিণত মস্তিষ্ক যে হয়ে উঠতে পারে ফুটবলের ‘সুপার কম্পিউটার’- সে সম্ভবনার শিখা দেখতে পেয়েছেন স্কালোনি। আর্জেন্টাইন সমর্থকদের প্রত্যাশা স্রেফ, সম্ভাবনা সত্যি হওয়ার।