অবশেষে পূর্ণকালীন মেয়াদে চেয়ারম্যান পেল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আগামী ৩ বছর মেয়াদে পিসিবির ৩৭তম চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন পাঞ্জাব রাজ্যের অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নাকভি।
লাহোরের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান শাহ খাওয়ারের ডাকা সভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সর্বসম্মতিক্রমে এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন মহসিন।
পিসিবির নতুন চেয়ারম্যান ক্রিকেট পাড়ায় নবাগত মুখ হলেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গন ছাড়াও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে। তাঁর নিয়ন্ত্রাধীনে ছয়টি টিভি চ্যানেল ও একটি সংবাদপত্র রয়েছে। একটা সময়ে সিএনএন-এও কাজ করেছেন তিনি। একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রধান ছিলেন।
অবশ্য নাকভির পড়াশুনা, কর্মস্থল- দুটোতেই জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। যদিও স্নাতক সম্পন্ন করেছেন পাকিস্তানেই। তবে এরপর আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মিডিয়া সায়েন্সে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে। এরপর সেখানেই তিনি যোগ দেন সিএনএ-এ। এরপর ২০০৯ সালে পাকিস্তানে ফিরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সিটি মিডিয়া গ্রুপ।
যে গ্রুপের অধীনে এখন ৭ টা সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তবে, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হলেও মহসিন নাকভি এরই মধ্যে বেশ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ বনে গিয়েছেন। গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
পাঞ্জাব বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হামজা শাহবাজের সুপারিশ অনুযায়ী সে সময় নাকভিকে কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল। ১৪ মাসের ব্যবধানে এবার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীত হচ্ছেন তিনি। তবে, পিসিবি প্রধানের দায়িত্বে সামনে বেশ চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে নাকভির সামনে।
প্রথমত, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রমিজ রাজাকে অপসারণের পর থেকে এতদিন পূর্ণকালীন কোনো চেয়ারম্যান ছিল না পিসিবির। এই সময়ে নাজাম শেঠি ও জাকা আশরাফ বিভিন্ন মেয়াদে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করেছেন। এক বছরের বেশি সময় পর পূর্ণকালীন এ পদে নাকভিকে তাই পাকিস্তান ক্রিকেটের চলমান অরাজকতা, অস্থিরতার মুখোমুখি হতে হবে অনুমিতভাবেই।
এ ছাড়া ২০২৫ সালে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা রয়েছে। ১৯৯৬ সালের পর এখন পর্যন্ত দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানের মাটিতে গড়ায়নি কোনো আইসিসির ইভেন্ট। নাকভির আমলেই সেটি হতে যাচ্ছে। তবে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়া নিয়ে আবার বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে ভারত। সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তানের এ বৈরিতাকে পাশে রেখে পাকিস্তানের মাটিতে আসন্ন টুর্নামেন্টের সফল আয়োজন নিশ্চিত করতে বড় একটা ভূমিকা রাখতে হবে নাকভিকে।
এখানেই শেষ নয়। পিসিবি প্রধানের চেয়ার রীতিমত মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো। গত দুই বছরেই চার বার পরিবর্তিত হয়েছে এ পদ। সদ্য নির্বাচিত মহসিন নাকভিকে নিশ্চিতভাবেই এ চাপের মধ্য দিয়েই তাঁর সময়কাল পার করতে হবে।