তিন নৌকায় পা!

স্প্যানিশ ফুটবলে সবচেয়ে বড় তিনটা ক্লাবের নাম কি? এর জন্য আপনাকে বড় কোনো হিসেব কষতে হবে না। এক নি:শ্বাসেই বলে দেওয়া যায়, রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। রিয়াল-বার্সা মহারণের তো আলাদা নামই আছে, এল ক্লাসিকো।

এল ক্লাসিকোর তোপে মাদ্রিদের আরেক দল অ্যাটলেটিকোও পিছিয়ে থাকে না। রিয়াল হোক কিংবা বার্সা, দু’দলের জন্যই এটলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচ হয়ে দাঁড়ায় ‘হাই ভোল্টেজ’। আর রিয়াল-অ্যাটলেটিকো মধ্যকার ‘মাদ্রিদ ডার্বি’ ম্যাচে তো সেই উত্তাপটা আরো ঘণীভূত হয়।

রিয়াল-বার্সার চির বৈরীতার কথা সবারই জানা। এই পালে বাড়তি হাওয়া লাগে যখন দুই দলের সমর্থকরা কখনোই শ্রেষ্ঠত্বের সুরে একমত হতে পারে না। রিয়াল-বার্সা দ্বৈরথের ভীড়ে অ্যাটলেটিকো কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ইতিহাস বলে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনার পর স্পেনের সবচেয়ে সফলতম ক্লাবটার নাম অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে এই তিন দলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীতা, চির বৈরীতার বেড়াজাল ভেদ করে এমন দু’জন ফুটবলার রয়েছেন যারা এই তিন দলেই খেলেছিলেন। চলুন সেই দুই ফুটবলারকে চিনে নেওয়া যাক।

  • বার্নড শুস্টার

জার্মান এই মিডফিল্ডার বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিলেন ১৯৮০ সালে। একটানা খেলে গিয়েছেন আট বছর। কিন্তু দল ও ম্যানেজমেন্টের সাথে বেশ কিছু তিক্ততায় তিনি ১৯৮৮ সালে বার্সা ছেড়ে দেন।

যোগ দেন বার্সার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে। পরের দুই মৌসুম সেখানেই খেলেন সুস্টার। অবশ্য আট মৌসুম বার্সায় খেলা সুস্টার রিয়ালেই ছিলেন বেশি সফল। বার্সার হয়ে যেখানে তিনি আট মৌসুমে একটি লিগ কাপ জিতেছিলেন সেখানে রিয়ালের হয়ে দুই মৌসুমে জেতেন টানা দু’ লিগ কাপ।

রিয়ালের হয়ে দুই মৌসুম খেলার পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে যোগ দেন সুস্টার। সেখানে তিনি ৩ মৌসুম খেলেন। তিন মৌসুমে তার প্রাপ্তি ছিল দু’টি কোপা দেল রে’র শিরোপা।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষে বার্নড সুস্টার এরপরে কোচিংও করিয়েছেন। ১৯৯৭ সালে জার্মান ক্লাব ফরচুনা কোলন দিয়ে কোচিং শুরু করা সুস্টার এক সময় রিয়াল মাদ্রিদেরও কোচ ছিলেন। প্রায় দুই বছরের কোচিংয়ে তিনি রিয়ালকে এনে দিয়েছিলেন একটি লিগ শিরোপা এবং একটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ।

  • মিগুয়েল সোলার

কাতালুনিয়ার শহর জিরোনায় জন্ম নেওয়া এই লেফট ব্যাক ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচটি বছর কাটিয়েছিলেন এস্প্যানিওলে। এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি যোগ দেন বার্সেলোনায়। বার্সায় তিন মৌসুম খেলার পর ১৯৯১ সালে তিনি দলবদল করে আসেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে।

অবশ্য অ্যাটলেটিকোর জার্সিতে তিনি বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। ২৫ ম্যাচ আর এক মৌসুম পরেই আবার বার্সেলোনায় ফিরে যান। নিজের পুরনো ক্লাবে ফিরলেও হারানো জায়গাটা আর ফিরে পাননি সোলার৷ পুরো মৌসুমে মাত্র পাঁচ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পান তিনি। এ কারণে ১৯৯৩ সালে তিনি যোগ দেন সেভিয়াতে।


সেভিয়ার হয়ে দুই মৌসুম খেলার পর ১৯৯৫ সালে রিয়াল মাদ্রিদে নিজের নাম লেখান সোলার। অবশ্য অ্যাটলেটিকোর মতোই রিয়ালের জার্সি গায়ে খুব বেশি ম্যাচে দেখা যায়নি তাকে। পুরো ক্যারিয়ারে সোলারকে তাই বার্সা আর সেভিয়ার খেলোয়াড় হিসেবেই বেশি বিবেচিত করা হয়।

তবে, বার্নড সুস্টারের পর সোলারই একমাত্র ফুটবলার যিনি বার্সা, রিয়াল, অ্যাটলেটিকো- তিন দলের হয়েই খেলেছিলেন। যদিও সুস্টারের মতো সোলার অতটা সফল ছিলেন না৷ তারপরও ক্যারিয়ারে দু’টি লিগ শিরোপা, তিনটি কোপা দেল রে, একটা রিকোপা, একটা ইউরোপিয়ান সুপার কাপ এবং দু’টি সুপার কোপা অব স্পেন মিলিয়ে শিরোপার সংখ্যাটা একেবারে কম না।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link