সৌম্য সরকার আলোচনায় নেই, সৌম্য সরকার লাইমলাইটে নেই – তিনি কি তবে হারিয়ে গিয়েছেন? না, সেটা হতে যাবে কেন। সৌম্য নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সেই সুযোগ দিচ্ছে কই। বারবার জাতীয় দলে জায়গা দিয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধেই আলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে তাঁকে।
এই যেমন নিউজিল্যান্ড সফরের আগে কারও সুদূর ভাবনাতেও ছিলেন না সৌম্য। অথচ দল ঘোষণার সময় ঠিকই পাওয়া গেলো তাঁর নাম। বলা হলো, অতীত অভিজ্ঞতা আর বাউন্সি পিচে ভাল খেলার সুনামের জন্য নেয়া হয়েছে। কিন্তু, এসবের ফাঁকে দলে ফেরার সবচেয়ে বড় ক্রাইটেরিয়া ‘পারফরম্যান্স’-এর শর্তটাই এড়িয়ে গিয়েছেন নির্বাচকরা।
হুট করে মাঠে নামিয়ে দিলে যা হওয়ার কথা তাই হয়েছে; ব্যাটে, বলে হতশ্রী পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই বাঁ-হাতি। বৃষ্টির গ্যাড়াকলে পড়ে ডেথ ওভারে মূল বোলারদের ব্যবহার করতে পারেনি অধিনায়ক নাজমুল শান্ত, গুরু দায়িত্ব পালনের ভার তাই উঠেছিল তাঁর কাঁধে। ছয় ওভারে ৬৩ আর শেষ তিন ওভারে ৫৪ রান খরচ করে সেখানে ভজকট বাঁধিয়েছেন তিনি।
ব্যাট হাতে সেটা পুষিয়ে দেয়ার সুযোগ ছিল সৌম্যর সামনে। অন্যসময় হলে বাউন্সি পিচে নিজের সেরাটা দিতে পারতেন হয়তো, কিন্তু অফ ফর্মে থাকা এই ব্যাটার বল বুঝতেই পারলেন না। প্রথম ওভারেই ধরা পড়েছেন স্লিপে, নামের পাশে তখনও কোন রান যোগ করতে পারেননি তিনি।
চার বলের এই ইনিংসে একবারের জন্যও মনে হয়নি এই ওপেনার খেলার মধ্যে আছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য নূন্যতম যে আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন সেটাও ছিল না তাঁর মাঝে৷ সবমিলিয়ে সৌম্য সরকারের উপস্থিতি দর্শকদের জন্য চরম বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
চলতি বছর কম নাটক হয়নি তাঁকে নিয়ে। এশিয়া কাপের দলে নেয়ার উদ্দেশ্যে সুযোগ দেয়া হয়েছিল ইমার্জিং এশিয়া কাপে, সেখানে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। তবু, বিশ্বকাপের আগে আবার কিউই সিরিজের দলে জায়গা পান, এবারও কোন পারফরম্যান্স ছাড়াই মাঠ ছাড়েন।
এতকিছুর পরও সৌম্য সরকারকে নিয়ে আদিখ্যেতা কমছে না। একের পর এক সুযোগ কড়া নাড়ছে তাঁর দরজায়; কার জন্য এত অগ্রাধিকার পাচ্ছেন সৌম্য, এভাবে কতদিন চলবে সেসব উত্তর জানা নেই কারোই। তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল, কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের প্রিয় পাত্র হওয়ার গুরুত্ব কি এতটাই যে, দিনের পর দিন পারফরম না করেও সুযোগ পেয়ে যাবেন তিনি?