লাল-সবুজের ক্রিকেটপাড়া এখন ব্যস্ত সময় পার করছে; বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ক্রিকেটপ্রেমীদের। অবশ্য বরাবরের মত এবারও বিশ্বব্যাপী বিপিএলের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি লিগগুলোর সাথে তুলনায় এই টুর্নামেন্ট কি আদৌ সেরার তালিকায় জায়গা পাবে?
উত্তরটা নেতিবাচকই হবে, প্রায় এক যুগ আগে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল ব্যর্থ হয়েছে এই লিগকে বিশ্বমানের করে তুলতে। এমন ব্যর্থতার পিছনের কারণগুলো দেখা যাক।
- পেশাদারিত্বের অভাব
ফ্রাঞ্চাইজি মালিক কিংবা আয়োজক কতৃপক্ষ কারো মাঝেই পরিপূর্ণ পেশাদারিত্ব দেখা যায়নি। সিদ্ধান্ত নেয়া, প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি বছর সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় গভর্নিং কাউন্সিলকে। এছাড়া দলগুলো জার্সি, কিট সামগ্রী তৈরিতে প্রায় অমার্জনীয় ভুল করে। এর চেয়ে বড় বিষয়, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে পারে না অধিকাংশ ফ্রাঞ্চাইজি।
মাঠে গড়ানোর পর থেকে এমন কোন মৌসুম হয়নি, যেখানে উল্লেখযোগ্য বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। গত বছর তো বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় একটা দলের মালিককে শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। শুরুটা ভাল হলেও দেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টি লিগের বর্তমান অবস্থা বেহাল, অথচ সংশ্লিষ্ট কেউই উন্নতির জন্য তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
- অর্থনৈতিক মডেল
বিপিএল কি লাভজনক কোন প্রজেক্ট – হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না। তবে লাভজনক হলেও অন্য লিগের তুলনায় এই টুর্নামেন্ট থেকে বলার মত মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এর মূল কারণ বোর্ডের রক্ষণশীল মানসিকতা, বিদেশি একাধিক ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি বিপিএলের দায়িত্ব নিতে চাইলেও বিসিবি কতৃত্ব হারানোর ভয়ে তাঁদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
আবার রেভিনিউ শেয়ারের ক্ষেত্রেও বিসিবি নারাজ, এজন্যই বেক্সিমকো গ্রুপ (ঢাকা ডায়নামাইটস) চার মৌসুম দল চালানোর পর বিপিএল থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও সেই পথে হাঁটতে পারে।
- ফ্যানবেজ না থাকা
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জনপ্রিয়তা নির্ভর করে ভক্তগোষ্ঠীর উপর। কিন্তু বিপিএল একমাত্র টি-টোয়েন্টি লিগ যেখানে তেমন কোন দলের বিশেষায়িত সমর্থক নেই। আরেকটি বিষয় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ক্ষতি করে যে তাঁরা নির্দিষ্ট কোন আইকন ক্রিকেটারকে একান্ত নিজের ভাবতে পারে না; যেমনটা রোহিত শর্মা বা বিরাট কোহলিকে ভাবে মুম্বাই আর ব্যাঙ্গালুরু।