বিপিএলের শুরু থেকেই বেশ পরিকল্পিত এক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে রংপুর রাইডার্স। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে সব জায়গাতেই তাঁরা বেশ পেশাদারও বটে। প্রথমেই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নজর কেড়েছে দারুণ দল তৈরি করে। এছাড়া ক্রিকেটারদের বাড়তি সুযোগ সুবিধা দিয়েও প্রশংসা পেয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তবে মাঠের পারফর্মেন্সে কী সেই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে আদৌ?
ছয় ম্যাচ খেলে তাঁরা জয় পেয়েছে তিন ম্যাচে। এই মুহূর্তে দলটি আছে পয়েন্ট টেবিলের চার নাম্বার অবস্থানে। সবমিলিয়ে মাঠের ক্রিকেটের নিজেদের প্রভাবটা রাখতে পারেনি রংপুর রাইডার্স।
যদিও বিপিএল শুরু হবার আগে থেকেই বেশ জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করছিল দলটা। অনুশীলন শুরু করেছিল তাঁদের নিজস্ব মাঠে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের মিলিয়ে শক্তিশালী দলও গড়েছিল রংপুর।
তবে মাঠের ক্রিকেটে সেই সাফল্যটা আসছেনা। তিন ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের চার নাম্বারে আছে ঠিকই তবে নিজেদের ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারেনি দলটা। এখন পর্যন্ত দলটা সুবচেয়ে বড় পারফর্মার শোয়েব মালিক। আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ নেওয়াজও চেষ্টা করছেন নিজের সেরাটা দেয়ার।
তবে রংপুরের লোকাল ক্রিকেটাররা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিতে পারছেন না। টপ অর্ডারে নাঈম শেখ, রনি তালুকদার কিংবা পারভেজ ইমনরা ভালো শুরু এনে দিতে পারছেনা। ফলে ইনিংসের শুরুতেই চাপে পড়ে যাচ্ছে রংপুর।
এছাড়া স্লগ ওভারও ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারছেনা দলটা। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ব্যাট হাতে এখনো নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। আরেক ব্যাটার শামীম পাটোয়ারিও স্লগ ওভার কাজে লাগাতে পারছেন না।
ওদিকে শেখ মেহেদীকে ব্যাটিং অর্ডারের বিভিন্ন জায়গায় কাজে লাগাতে চাইছে দলটা। তবে কোথাওই সেভাবে পারফর্ম করতে পারছেন না এই অলরাউন্ডার। লোকাল ব্যাটারদের এই অফ ফর্মের কারণেই ভুগতে হচ্ছে দলটাকে।
ব্যাট হাতে দলটা হতাশ করলেও বল হাতে একেবারে মন্দ করছেনা রংপুর রাইডার্স। লোকাল কিংবা বিদেশী সবাই নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স করে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন তরুণ স্পিনার রাকিবুল হাসান। তাঁর সাথে সঙ্গ দিচ্ছেন আরেক দেশি স্পিনার শেখ মাহেদী।
পেসার হাসান মাহমুদও নিজের চেনা রূপটাই দেখাচ্ছেন এবারের বিপিএলে। ইকোনমিক্যাল বোলিং করে যাচ্ছেন, সাথে প্রয়োজনের সময় উইকেটও এনে দিচ্ছেন। নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করেছেন রবিউল হক। এই পেসারও দেখিয়েছেন বল হাতে নিজের স্বক্ষমতা।
ওদিকে পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফও আছেন এই দলটার পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টে। তিনিও পেস আক্রমণে দলটার বড় শক্তির জায়গা। এখন শুধু ব্যাট হাতে সোহান, শামীমরা পারফর্ম করতে শুরু করলেই প্লে অফে খেলাটা সহজ হয়ে যায় রংপুরের জন্য।
তবে রংপুরের অন্যতম দুই পারফর্মার মোহাম্মদ নেওয়াজ ও হারিস রউফকে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে পাবেনা দলটা। ফলে দ্রুতই তাঁদের বিকল্পও খুঁজে বের করতে হবে রংপুর রাইডার্সকে। তাহলেই হয়তো নিজদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারবে তাঁরা।