সাকিব আল হাসান থাকবেন আর বিতর্ক থাকবে না – তা কি করে হয়। সকাল সকাল ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি উন্মোচনের ছবি আসার সাথে সাথেই শুরু হল নয়া বিতর্ক। আসলে এখানে বিতর্কটা আসলে সাকিব না থাকায়। ট্রফি নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম আর নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন থাকলেও ছিলেন না সাকিব। তাঁর জায়গায় ট্রফির পাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়েছেন নুরুল হাসান সোহান, টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) খেলবেন বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দলের বিশ্বকাপ ক্যাম্পে ছিলেন না সাকিব। খেলেননি আরব আমিরাতের বিপক্ষে দু’টি ম্যাচও। তবে, নিউজিল্যান্ডে তিনি সময় মত পৌঁছাবেন সেটা অন্তত প্রত্যাশিত ছিল। তবে, সেই প্রত্যাশা মিটেনি। বরং দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক। যেখানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলেও চলে আসতে পারলেন বাবর আজম, সেখানে সাকিব কেন পারবেন না? – এমন প্রশ্নও করছেন কেউ কেউ।
আসলে কি কি ঘটেছে এর মধ্যে? সেটাই একটু জানা যাক এবার। আসলে এখানে সাকিবের নয়, দোষ বরং নিউজিল্যান্ডের ফ্লাইট ও টিকেট সংকটের। সব ঠিক ঠাক থাকলে সিপিএল শেসে গেল ৩০ অক্টোবরই সাকিবের নিউজিল্যান্ডে পৌঁছে যাওয়ার কথা। পারেননি, টিকেট নেই বলে।
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের বিমান টিকেটে বেশ সংকট দেখা গেছে। গেল অক্টোবর থেকে বিমান ভ্রমণের সকল বাঁধা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার। ফলে, আগাম টিকেট বুক করে রেখেছেন অনেকেই। সেখান থেকেই শুরু হয়েছে টিকেট নিয়ে হাহাকার। এমনকি বিসিবির একজন পরিচালকও নাকি টিকেট না পাওয়ায় যেতে পারবেন না নিউজিল্যান্ডে।
এরপর বিকল্প হিসেবে সাকিব তাহিতি হয়ে ক্রাইস্টচার্চ যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেটা হলেও সাকিব চার অক্টোবর মানে মঙ্গলবার পৌঁছে যেতে পারেন ক্রাইস্টচার্চে। সেই টিকেট সাকিব পেয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে সাকিব লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দরেও যান দুই অক্টোবর, সেদিনেই ছিল ফ্লাইট। কিন্তু, এবার শুরু হয় তাহিতির ভিসা নিয়ে জটিলতা। ফলে, সাকিব আর বিমানে উঠতে পারেননি।
পরে এয়ারলাইন্স থেকেই সাকিবের ভিসা সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। সাকিব চার অক্টোবর রওনাও দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে, সমস্যা হল ট্রানজিট আর ভ্রমণ মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সাকিব পৌঁছাবেন বৃহস্পতিবার বিকালে। পরদিন শুক্রবার স্থানীয় সময় আড়াইটায় ম্যাচ। এখন এই বিরাট বিমানযাত্রার ধকল কাটিয়ে সাকিব কি আদৌ মাঠে নামতে পারবেন? – এ নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
হ্যাঁ, এটা ঠিক যে এর আগেও সাকিব ব্যক্তিগত কাজে বা কোনো বিজ্ঞাপনী শিডিউল মেলাতে ট্রফি উন্মোচনের ফটোসেশন মিস করেছেন। গেল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেই (বিপিএল) ফাইনালের আগে ট্রফি নিয়ে তিনি ছবি তোলেননি, কারণ তিনি তখন সেভেন আপের বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্বকাপের যাওয়ার আগে দলের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনও মিস করেন ব্যক্তিগত কারণে। সেসব নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে বিস্তর।
এবারের ইস্যুটা নিয়েও সমালোচনার সুযোগ অবশ্যই আছে। তবে, বাকিগুলোর মত এবারে সাকিবের দায় কিছুটা হলেও কম।