প্রথম দেখায় আপনার তাঁকে ক্যারিবিয়ান বলে ভুল হতে পারে। হাঁটার ধরণ কিংবা ব্যাট হাতে দাঁড়ানোর ধরণ – সবখানেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ‘ফ্লেয়ার’। যার চলন এমন, তিনি বলনেই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন!
নেপালের বিপক্ষে টসে জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। সিদ্ধান্ত জানানোর সময় বেশ বড় গলায় বলেছেন, নেপালকে ১৫০ রানের মধ্যে বেঁধে রাখতে চান। ছোট গলায় এও বলেছিলেন, ১০০ এর নিচে আটকে দিতে পারলে বেশি ভালো।
বলনেই থেমে যায়নি তামিমের বক্তব্য। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েই মান রেখেছেন নিজের আগ্রাসনের। নেপালকে ১০০ রানের নিচে থামানো যায় নি, ১৫০ রানের বেশিও করতে দেন নি। নেপাল গুটিয়ে গিয়েছে ১৪১ রানে।
নিজের আসল পরিচয়, ব্যাটার স্বত্বার পূর্ণ পরিচয় দিয়েই সেই লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জিতিয়ে ডাগআউটে ফিরেছেন আজিজুল তামিম। অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংসটিতে হাইলাইট হয়ে থাকবে মিড উইকেটের উপর দিয়ে হাঁকানো তিন তিনটা বিশাল ছক্কা।
যেই অনায়াস ভঙ্গিমায় তিনি বোলারদের স্ট্যান্ডে আছড়ে ফেলেছেন, সে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে পারে যে কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পাওয়ার হিটারদের কথা। তামিমের কুইক হ্যান্ড এবং ব্রুট পাওয়ার জানাবে, সে এই যুগের ক্রিকেটার।
অপেক্ষাকৃত দূর্বল নেপালকে পেয়ে এমন জ্বলে উঠেছেন ভাবারও কোন কারণ নেই। আগের ম্যাচেই হঠাত মহীরুহ হয়ে ওঠা আফগানিস্তানের বিপক্ষে হাকিয়েছিলেন অনবদ্য এক সেঞ্চুরি। সেই ইনিংসেও ছিলো চারখানা ছক্কার মার। আক্রমণ করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে কাঁপিয়ে দেয়া আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফরকেই।
তবে, তামিম পরিপূর্ণ প্যাকেজ নয়। গত ম্যাচের মত নেপালের বিপক্ষেও তার স্ট্রাইক রোটেশনে দূর্বলতা নজরে এসেছে। নেপালের বিপক্ষে তামিম বাউন্ডারি বিহীন বল থেকে ৬৭ বলে করেছেন মাত্র ২৬ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাউন্ডারি বিহীন ১২১ বল খেলে করেছিলেন কেবলই ৪৭।
স্পষ্টতই তামিমের ব্যাটিংয়ে উন্নতির জায়গা রয়েছে, সময়ও রয়েছে হাতে। তামিম যদি ক্রিকেট নিয়ে অধ্যাবসয়ী হতে পারেন, উন্নতি করতে পারেন স্ট্রাইক রোটেশনে, বাংলাদেশের টপ অর্ডার দূর্বলতার দীর্ঘ সময়ের সমাধান হতে যাচ্ছেন তিনিই।