বিশালদেহী এক ঝড়। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন ইয়াসির আলী চৌধুরি। ১২১ বলে সমান সাতটা করে চার আর ছক্কায় নামের পাশে রান অপরাজিত ১৪৩। ইয়াসির আলী রাব্বি ক্রিজে ছিলেন ঘন্টার হিসেবে সাড়ে তিন ঘন্টা। এতেই শক্তিশালী লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের উপরে রীতিমতো হয়েছে নির্যাতন, ধানমণ্ডি স্পোর্টস ক্লাবের স্কোরবোর্ডে ৩৩২ রান সংগ্রহ অন্তত সেটিই জানান দেয়।
শরীরের ওজন নাকি সেটা নিয়ে শোনা সমালোচনার ঝড়, কোনটা আসলে বেশি ভারী? ইয়াসির আলীর হয়ত সেসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই, নিরবে নিভৃতে ব্যাট হাতেই ঝড় তোলাই যেন তার একমাত্র ধ্যান ও জ্ঞান। হোক এনসিএল, বিপিএল কিংবা ডিপিএল, ফরম্যাট বদলায়, প্রতিপক্ষ বদলায়, নিজেকেও বদলাতে হয় নতুন দল আর সর্তীথদের সাথে মানিয়ে নিতে। তবে বদলাচ্ছে না ইয়াসিরের ফর্ম।
ব্যাট হাতে একের পর এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে যাচ্ছেন তিনি। সবশেষ বিপিএলটাও শেষ করেছেন প্রায় সাড়ে তিনশো রান করে, স্ট্রাইকরেটটা ছিল ১৫০ এরও উপরে। চলতি ডিপিএলের প্রথম ম্যাচেই খেলেছিলেন ৪১ রানের একটা কার্যকরী ইনিংস।
তবে ইনিংসটা বড় করতে পারেননি সেদিন। লিন্তু সেই ভুল আর লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের বিপক্ষে করেননি তিনি। শুরুতে দেখে শুনে সামলেছেন শরীফুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম, শেখ মেহেদীদের। দল নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও একপ্রান্তে আগলে রেখে ইনিংসের শেষভাগে চড়াও হন মইন খানকে নিয়ে।
একের পর এক কচুকাটা করে বাউন্ডারির বাইরে ফেলেছেন শক্তিশালী রূপগঞ্জের বলগুলো। ইনিংসের শেষ বল অবধি ক্রিজে থেকে ত্রাস সৃষ্টি করে গেছেন বাইশ গজে। উইকেটের চারপাশেই বাউন্ডারির পাশাপাশি প্রচুর রান নিয়েছেন সিঙ্গেলে, দলকে কখনোই চাপে পড়তে দেননি।
শুরুতে ধীরগতির ব্যাটিং করলেও পরে তা পুষিয়ে দিয়েছেন একদম সুদে-আসলে। ধানমণ্ডির দলটায় তেমন নামি-দামি তারকা ক্রিকেটার নেই, অপরদিকে জাতীয় দলের অসংখ্য তারকা ঠাসা দল ছিল তার প্রতিপক্ষে। সেই তাগিদেই স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহ জমা করতেই হত তাকে।
নিজের কাজটা শতভাগ সঠিক ভাবেই করে গেছেন তিনি। রাব্বিকে ট্রল করা যায়, ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যায় কিন্তু থামানো যায় না। গালি তার সয়ে গেছে, তালি তিনি কমই পান। কিন্তু নিজের সেরাটা দিতে ইয়াসিররা ছুটে যায়, ছুটতেই থাকে অদম্য এক নেশায়। দমা চলবে না, সংগ্রাম যে চালিয়ে যেতেই হবে বাইশগজে।