তারুণ্যের হুঙ্কার আইপিএলে

ভারতীয় ক্রিকেটে তরুণদের আধিপত্য বেড়েছে, প্রতিনিয়তই বের হচ্ছে বিকল্প, বাড়ছে প্রতিযোগিতা। ভারতের জন্য এটা সুখকর হলেও ক্রিকেটের অন্য রাঘব বোয়ালদের জন্য রীতিমত অশনিসংকেত।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) সবসময়ই তরুণ ক্রিকেটার তৈরির আঁতুড়ঘর। ভারতীয় ক্রিকেটে এক আমুল পরিবর্তন এসেছে আইপিএল শুরুর পর থেকে। প্রতিবছরই টুর্নামেন্টটি থেকে বের হয় দারুণ সব প্রতিভা। এবারের আইপিএল থেকেও বেশ কিছু এমন নাম উঠে এসেছেন, যারা ভবিষ্যতে বিশ্ব ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়াবে।

সে তালিকায় সবার উপরেই থাকবে চেন্নাই সুপার কিংসের তরুণ ব্যাটার আয়ুশ মাহত্রে। আয়ুশের আইপিএল যাত্রা শুরু হয় ইনজুরিতে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া চেন্নাইয়ের নিয়মিত অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোডের বদলি হিসেবে। রুতুরাজের বদলি হিসেবে চেন্নাই তাকে দলে ভেড়ায় ৩০ লাখ রুপিতে।

তবে চেন্নাইয়ে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছেন আয়ুশ। প্রথম ম্যাচে ই খেলেন ১৫ বলে ৩২ রানের ইনিংস।এরপর টুর্নামেন্টটিতে নিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে আরসিবির বিপক্ষে মাত্র ৪৮ বলে করেন ৯৪ রান। ইনটেন্ট, টেকনিক কিংবা ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ সব দিকেই দারুণ, দক্ষিণ ভারতের এই তরুণ।

বৈভব সুরিয়াভানশীর কথা আলাদা করে না বললেই নয়, ১৪ বছর বয়সী এই তরুণ ৩৫ বলে শতক হাঁকিয়ে বনে গেছেন আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্ততম সেঞ্চুরিয়ান। দারুণ ন্যাচরাল ব্যাট সুইং, হিটিং অ্যাবিলিটি সব দিকেই নিজেকে পারফেক্ট প্রমাণ করেছেন বৈভব, বয়স বিচারে তাই তো অনেকই শচীন টেন্ডুলকারের সাথে তুলনায় মেতেছেন।

তবে কম যান নাহ দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে খেলা ২২ বছর বয়সী আরেক তরুন ব্যাটার অভিষেক পোড়েল। জন্মসূত্রে বাঙালি এই তরুন দিল্লির হয়ে খেলে যাচ্ছেন ম্যাচ উইনিং সব ইনিংস, দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। গত বছরে দারুণ পারফর্ম করা অভিষেককে ৪ কোটি রুপি তে রিটেইন করেছিলো দিল্লি। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার তিনি স্পিন কিংবা পেস উভয়ের বিরুদ্ধেই সাবলীল ব্যাটিং করতে পারেন।

অন্যদিকে প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব এ বছর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে তাদের দুই তরুণ ওপেনার প্রভসিমরান সিং এবং প্রিয়ানশ আরিয়াকে দিয়ে। এ বছর পাঞ্জাবের প্রায় ৫০ শতাংশ রানই এসেছে এই দুই আগ্রাসী তরুণের জুটি থেকে। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ৩৯ বলে শতক হাঁকিয়ে প্রিয়াংশ নিজের সিক্স হিটিং অ্যাবিলিটি দেখান। কেউ কেউ আজকাল তাঁকে বাঁ-হাতি বীরেন্দ্র শেবাগ বলেও ডাকছেন।

অন্য দিকে ধারাবাহিক ভাবে রান করা যেন রীতিমতো অভ্যাস হয়ে গেছে প্রভসিমরানের। পাওয়ার প্লে-তে পাঞ্জাবের হয়ে প্রতি ম্যাচেই এক্সপ্লুসিভ সূচনা করছেন, পুরো টুর্নামেন্ট ব্যাট হাতে ৪৩৭ রান করেছেন ১৭০ স্ট্রাইক রেটে। শুধু স্পোর্টিং উইকেটেই নয় স্লো উইকেটেও দ্রুত রান তুলতে পারেন তিনি।

ভারতীয় ক্রিকেটে তরুণদের আধিপত্য বেড়েছে, প্রতিনিয়তই বের হচ্ছে বিকল্প, বাড়ছে প্রতিযোগিতা। ভারতের জন্য এটা সুখকর হলেও ক্রিকেটের অন্য রাঘব বোয়ালদের জন্য রীতিমত অশনিসংকেত।

Share via
Copy link