ত্রাণকর্তা হয়ে আসা তারুণ্য

মনোবল যা ছিল তা একদম ভেঙে চুরমার, দলের হাল বেহাল, ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে থাকা একদল। নিশ্চয়ই চাইবে ঘুরে দাড়াতে। এমন সবক্ষেত্রে তরুণদের থেকেও প্রত্যাশা থাকে অভিজ্ঞদের উপর। অভিজ্ঞতাতেই ভরসা রাখতেন চান অধিকাংশ কোচ কিংবা সমর্থকেরা। কিন্তু তরুণদের প্রতি এমন মনোভাব তাদেরকে প্রতিটা সুযোগ কাজে লাগাতে সাহস জোগায়। তেমনই এক সাহস থেকে, প্রেরণা থেকে বার্সেলোনার গত ম্যাচে দলের জন্য এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছেন রোনাল্ড আরাউহো।

লা লিগার চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে গ্রানাডার বিপক্ষে ঘরের মাঠ নু ক্যাম্প স্টেডিয়ামে খেলতে নামে রোনাল্ড কোম্যানের দল। দলের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির অবর্তমানে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কাতালানরা। ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বার্সার আক্রমণ সংকট। ইনজুরি সমস্যায় দলের বাইরে রয়েছেন ওসমান ডেমবেলে, আনসু ফাতি, ব্রেথওয়েটদের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা।

আক্রমণ ভাগ সাজাতে হিমসিম খাওয়া কোচ কোম্যানের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিচ্ছে মধ্যমাঠের নিষ্প্রভতা আর রক্ষণের দূর্বলতা। এত সব কিছু মিলিয়ে বার্সার অবস্থা হ-য-ব-র-ল। এমন পরিস্থিতেতে গ্রানাডার মতো দলের সাথে হারতে বসা বার্সাকে বাঁচিয়েছেন তাদের রক্ষণ ভাগের তরুণ খেলোয়াড় রোনাল্ড আরাউহো। ম্যাচের ৯০ মিনিটে আরেক তরুন মিডফিল্ডার গাভির চিপ করা বলে মাথা লাগিয়ে গোল আদায় করে নেন আরাউহো। এক রাতের মধ্যে বনে গেলেন বার্সার হিরো। হবারই কথা শূন্যতা থেকে ফিরিয়ে তো দলকে এনেছেন তিনিই।

বার্সার এই তরুণ ডিফেন্ডার বেশ সম্ভাবনাময়ী একজন খেলোয়াড়। মাত্র ২২ বছর বয়সেই নিজের জায়গাটা মোটামুটি পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন বার্সার রক্ষণ দূর্গে। উরুগুয়ে জাতীয় দলের হয়ে তিন ম্যাচ খেলা আরাউহো ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলেছেন স্বদেশি ক্লাব রেনতিসতাসে। তারপর সেখান থেকে স্বদেশি আরেক ক্লাব বোস্টোন রিভার হয়ে চলে আসেন স্পেনের দল বার্সেলোনা বি দলের শিবিরে। বি দল হতে প্রমোশন পেয়ে এসেছেন কাতালানদের মূল দলে।

রক্ষণে নিজেকে বারংবার প্রমান করেছেন তরুণ তুর্কি আরাউহো। প্রায় চয় ফুত উচ্চতার এই খেলোয়াড় তাঁর উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে এড়িয়াল বল প্রতিহত করতে বেশ পারদর্শী এর পাশাপাশি করতে পারেন গোলও। প্রতিপক্ষ এটাকারের মুভমেন্ট পড়ে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারেন তিনি।

ছোঁ মেরে বল ছিনিয়ে নেবার দক্ষতাও প্রশংসনীয়। নিজের বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে কেড়ে নিতে পারেন বল। আর দারুণ ধৈর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করেন প্রতিপক্ষের ভুলের। সুযোগ বুঝে বল নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে নৎসাত করে দলকে করেন বিপদমুক্ত। এক কথায় একজন আদর্শ ডিফেন্ডারের য সকল গুণ থাকা দরকার তা রয়েছে আরাউহোর মধ্যে।

আরাউহো হতে পারেন একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। সঠিক পরিচর্যা আর দিকনির্দেশনা পেলে তাঁর সামর্থ্য রয়েছে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার। সেরা ডিফেন্ডারদের সাথে নিজের নামটি লিখার মতো সক্ষমতা রয়েছে তাঁর। একাগ্রতা, নিষ্ঠা আর সেরাদের সেরা স্পৃহাই পারে তাঁকে বার্সেলানোর ও উরুগুয়ে ফুটবলের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় বানাতে। যদি ভাগ্য তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয় কেবল তবেই রোনাল্ড আরাউহো হতে চলেছেন সেরা ডিফেন্ডারদের একজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link