তিন পরিবর্তনে ভারত বনে গেছে অপরাজেয়

অপ্রতিরোধ্য, অপরাজেয় ভারত এশিয়া কাপে দেখাচ্ছে একচ্ছত্র আধিপত্য। অথচ সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনালই খেলতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। কি এমন পরিবর্তন ঘটে গেল দলটায়?

অপ্রতিরোধ্য, অপরাজেয় ভারত এশিয়া কাপে দেখাচ্ছে একচ্ছত্র আধিপত্য। অথচ সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনালই খেলতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। কি এমন পরিবর্তন ঘটে গেল দলটায়? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে নিদেনপক্ষে তিনখানা পরিবর্তন খুঁজে পাওয়া যায় বর্তমান দলের মধ্যে।

প্রথমত ওপেনিংয়ে আক্রমণাত্মক অভিষেক শর্মার অন্তর্ভুক্তি বেশ বড়সড় বদল এনেছে দলের মধ্যে। তাছাড়া তার সাথে ওপেনিংয়ে শুভমান গিলও তাল মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের ব্যাট। এই দুই জনে মিলে এখন পর্যন্ত ২৫৮ রান যুক্ত করেছেন ভারতের ওপেনিং পজিশনে। পাঁচ ম্যাচে বর্তমান ভারতের ওপেনিং জুটি থেকে রান এসেছে ৫১.৬ গড়ে। যেখানে অভিষেক ও শুভমান জুটির স্ট্রাইকরেট ছিল ১৮২.৮২।

অন্যদিকে ২০২২ সালের এশিয়া কাপে রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল সামলেছিলেন ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব। ৪ ম্যাচে মোটে ১০৪ রান নিতে পেরেছিল রোহিত-রাহুলের ওপেনিং জুটি। গড় ছিল গড় ছিল ২৬, আর স্ট্রাইকরেট ছিল ১৪২.৪৬। পার্থক্যটা দিনের আলোর মত স্পষ্ট। ওপেনিংয়ে এই দাপটের কারণেই মূলত ভারতের জয়গুলোকে বেশ সহজ জয় মনে হচ্ছে দিনশেষে। শুধু যে ব্যাটিংয়ে খেলোয়াড় পরিবর্তনে আমুলে বদলে গেছে ভারত তা নয়, বদল এনেছে বোলিং পরিকল্পনাতেও।

২০২২ ও ২০২৫ দু’টো এশিয়া কাপই গড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঠে, বিশেষ করে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই ভারত তাদের অধিকাংশ ম্যাচ খেলেছে দুই টুর্নামেন্টে। ২০২২ সালে যেখানে পেসারদের উপর ভারতের নির্ভরতা ছিল বেশি, সেখানে ২০২৫ সালে এসে ভারতের বোলিং আক্রমণের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বনে গেছেন দলের স্পিনাররা। কেননা দুবাইয়ের কন্ডিশন যে পেস বান্ধব।

২০২২ সালে ৫৯.৭৯ শতাংশ ওভারে বল করেছিলেন পেসাররা। সেটা এই আসরে নেমে এসেছে ৪৮.৭০ শতাংশে। অন্যদিকে স্পিনাররা ২০২২ এশিয়া কাপে বল করেছিলেন ৪০.২০ শতাংশ ওভার। সেটা এবারের আসরে বেড়ে দাঁড়িয়ে ৫১.৩০ শতাংশে। অতএব স্পিনারদের উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। কন্ডিশন অনুযায়ী এই পরিকল্পনা সুফল বয়ে এনেছে ভারতের জন্যে। পাঁচ ম্যাচে ৩৭ উইকেটের ২২টি শিকার করেছেন স্পিনাররা। যার শতাংশ হিসেবে দাঁড়ায় ৫৯.৪৬ শতাংশ। গত আসরে সংখ্যাটা ছিল ৪০.২০ শতাংশ।

অতএব পরিকল্পনার পরিবর্তন ইতিবাচক ফলাফলই বয়ে নিয়ে এসেছে ভারতের জন্যে। তাছাড়া দলে অলরাউন্ডারদের আধিক্যও ভারতকে সহয়তা করছে দারুণভাবে। ২০২২ সালে শুধুমাত্র হার্দিক পান্ডিয়া প্রাধান্য পেয়েছিলনে অলরাউন্ডার হিসেবে। তবে এদফা অক্ষর প্যাটেল ও শিভাম দুবের মত অলাউন্ডাররা দলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করছে। আর এই দিকটাও ভারতের অপ্রতিরোধ্য হওয়ার ক্ষেত্রে দারুণ প্রভাব ফেলছে বটে।

মোদ্দাকথা নিজেদের শক্তিমত্তা, দলের পরিকল্পনার পরিবর্তন ও কন্ডিশন অনুযায়ী বদল আনা ভারতের পক্ষে কাজ করছে দারুণভাবে। সে কারণেই বছর তিনেকের মাথায় এশিয়া কাপে অপরাজেয় এক শক্তিতে পরিণত হয়েছে সুরিয়াকুমার যাদবের টিম ইন্ডিয়া।

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link