মাত্র পাঁচ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২৬ টেস্টে তিন সেঞ্চুরি সাত হাফ সেঞ্চুরিতে করেছেন ১৫৩৫ রান। ওয়ানডতে টেস্টের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে করেছেন ৮২৬ রান, যেখানে দুটি সেঞ্চুরির বিপরীতে চারটি হাফ সেঞ্চুরি।
আর প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে ১১৪ ম্যাচে ২৬ সেঞ্চুরিতে ৯০২৩ রান। ১৮ বছর বয়সে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে অভিষেক। ২০ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে সব চেয়ে কম বয়সে এক টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ড কিংবা দশম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড জুটি এসবই হয়তো বাঁচিয়ে রাখবে তাকে।
পুরো নাম ফিলিপ জোয়েল হিউজ। ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর, মেলবোর্ন টেস্টে দলে ফেরার লক্ষ্যে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে মাঠে নেমেছেন ফিল হিউজ। কে জানত হয়তো এটাই তাঁর শেষবারের মতো মাঠে নামা। সেখান থেকে সোজা গিয়েছিলেন হাসপাতালে, সেখান থেকে বের হয়েছেন যখন, শরীরে আর প্রাণ ছিল না।
৬৩ রানের অপরাজিত ইনিংসটি ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় আজীবন অপরাজিত থেকে যাবে। নিউ সাউথ ওয়েলসের বোলারদের একের পর এক বাউন্স সামলাচ্ছেন।
১৯ টি বাউন্সে রান নিয়েছেন হিউজ কিন্ত শন অ্যাবোটের ২০তম বাউন্স পুল করতে গিয়ে সরাসরি আঘাত করে মাথার পেছনের হেলমেটের নিচের অংশে৷ সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হিইজ। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, সেই জ্ঞান আর কখনও ফিরেনি।
মাঠ থেকে দ্রুত তাকে নেওয়া হয়েছিল সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে, হয়েছিল অস্ত্রোপচারও কিন্ত তারপরও ফেরানো যায়নি হিউজকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দুই দিন ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর কোটি মানুষের প্রার্থনা পাশ কাটিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান ফিল হিউজ।
২০১৩ সালে নটিংহ্যামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে ফিলিপ হিউজ ও অ্যাস্টন অ্যাগার দশম উইকেট জুটিতে ১৬৩ রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন । যা এখন পর্যন্ত টেস্ট ইতিহাসের দশম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ। ওই ম্যাচে হিউজ অপরাজিত ছিলেন ২২২ বলে ৮১ রান করে।
রেকর্ড হয়তো একদিন রেকর্ডের পাতায় থাকবে না তবে হিউজ কোটি ক্রিকেট প্রেমীদের মনে থেকে যাবে এক গভীর ক্ষত হয়ে। যতবার কোন বাউন্সার ব্যাটসম্যানের হেলমেটে আঘাত করবে ততবার মনে পরবে হিউজের কথা। তাই তো হিউজ না থেকেও থাকবেন স্কোরবোর্ডে ৬৩ নট আউট হয়ে।