ইস! এই এক দীর্ঘশ্বাস মিশ্রিত শব্দই যেন ধ্বনিত হয়েছে পুরো ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম জুড়ে। দিলশান মাদুশাঙ্কার স্লো অফ কাটারে শর্ট কাভারে আটক বিরাট কোহলি। দারুণ এক ইনিংসের সমাপ্তি। আরও একবার সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও থামতে হলো বিরাটকে।
এই বিশ্বকাপে বিরাটের সামনে হাতছানি ছিল শচীন টেন্ডুলকারকে ছাপিয়ে যাওয়ার। অন্তত ওয়াংখেড়েতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিরাট ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীনকে। আর একটি সেঞ্চুরিই তো ফারাক দু’জনের মাঝে।
শচীনের ঘরের মাঠ। আজ আবার উন্মোচিত হয়েছে ব্যাটিং ঈশ্বরের মূর্তি। মাঠে তিনি উপস্থিতও বটে। বিরাট খুব করে চাইলেন লিটল মাস্টারের সামনেই তাকে ছুঁয়ে ফেলতে। তবে আর তা হলো না। একরাশ আক্ষেপই আরও একবার বিরাটের সঙ্গী।
এদিন অবশ্য খানিক চাপ নিয়েই উইকেটে হাজির হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দলের ইনফর্ম ওপেনার রোহিত শর্মা ফিরেছেন দ্রুতই। নিজের চাপ ছাপিয়ে দলকে চাপমুক্ত করতেই হতো বিরাটকে। তার থেকে ভাল আর কে-ই বা পারেন দলকে স্বস্তি দিতে।
বিরাট তাই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন। তরুণ শুভমান গিলকে সঙ্গী করে দলকে চাপ মুক্ত করলেন। বিশাল সংগ্রহের ভীত গড়তে শুরু করেন। তবে কখনোই নিজের উপর চাপকে আধিপত্য বিস্তার করতে দেননি। এমনকি দলকেও রেখেছেন নির্ভার। ছয়ের বেশি রানরেটে গিলের সাথে তাল মিলিয়ে রান তুলেছেন বিরাট কোহলি।
এই দুইজনের যুগলবন্দী হয়েছেও বেশ। কখনো বিরাট হাত খুলে ব্যাট চালিয়েছেন, আবার কখনো সেই দায়িত্ব শুভমান নিজ হাতে তুলে নেন। দু’জনের স্বাস্থ্যকর এক রান তোলার প্রতিযোগিতা। তাতে অবশ্য স্বস্তির সুবাতাস ছড়িয়েছে ভারতের ড্রেসিং রুমে।
শ্রীলঙ্কার বোলারদের বিপক্ষে একেবারে হিসেব কষেই ব্যাটিং করেছেন বিরাট কোহলি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন ঝুঁকি নেননি। বেশ সাবলীল ভঙ্গিমায় রান তুলেছেন। অযথা হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলেননি কোন শট। ১১ খানা চারে তিনি ৮৮ রানের ইনিংস সাজিয়েছেন।
শতকের মঞ্চ প্রস্তুতই ছিল তার জন্যে। তবে ব্যক্তিগত ৯৪ তম বলে পাথুম নিসাঙ্কার তালুবন্দী হন। ব্যক্তিগত ৪৮তম সেঞ্চুরিতেই আটকে থেকে গেলেন তিনি। তবে দলের জন্যে অবশ্য কার্য্যকর এক ইনিংসই খেলে গেছেন। দলীয় ১৯৬ রানে আউট হন তিনি। শক্ত এক ভীত দিয়ে গেছেন পরবর্তী ব্যাটারদের জন্যে।
গিলের সাথে তার গড়া ১৮৯ রানের জুটি প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়ে দারুণ একটা সংগ্রহের জন্যে দলকে উজ্জীবিত করে দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্বকাপে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেও উঠে এসেছেন কিং কোহলি। তবুও দিনশেষে আক্ষেপই তার প্যাভিলনে যাওয়ার পথের সঙ্গী।