যেভাবে বিশ্বকাপে সফল রিয়াদ

বিগত বছরগুলোর ফিটনেস ইস্যু বাদ দিলে বরাবরই এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে,মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ওয়ানডে ফরম্যাটে ইভেন বাউন্স আছে, এমন উইকেটে ভাল খেলেন। রিয়াদের ব্যাটিংয়ের এই ধরনই তার আইসিসি ইভেন্টে ভাল করার বড় কারণ। কে না জানে, তার ক্যারিয়ারের সবগুলো সেঞ্চুরিই বিদেশের মাটিতে, বিশ্বকাপে আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।

রিয়াদ টেকনিক্যালি অ্যাভারেজ বা বেটার দ্যান অ্যাভারেজ হলেও তাঁর শক্তির জায়গাটা হল, তিনি ব্যাকফুটে ভাল খেলেন। এজন্য ভাল গতির কোয়ালিটি পেসারদের বিরুদ্ধেও তিনি সহজাত টাইমিংয়ে নিয়মিত বাউন্ডারি আদায় করতে পারেন। স্পিনে তাঁর খানিকটা দুর্বলতা আছে, এজন্য দেশের মাটিতে অতিরিক্ত ডট হজম করেন।

কিন্তু, আইসিসি ইভেন্টে খুব বেশি স্লো উইকেট বা র‍্যাংক টার্নার না থাকায়, রিয়াদ স্পিনারদেরও সামলে নেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নিয়মিত খেলা ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল ক্লিন হিটার, এবং সেই দক্ষতাটাও স্পিনের বিরুদ্ধে কাজে লাগে।

শেন ওয়াটসনের কথা, সৌরভ গাঙ্গুলি,সুনীল গাভাস্কার বা নাসের হুসাইনদের কথা শুনলে বুঝবেন, তাঁরা রিয়াদের টেকনিকের বা ব্যাটিংয়ের ধরনের ভক্ত। আসলে তারা রিয়াদকে আইসিসি ইভেন্টে ট্রু উইকেটে দেখেন,যেখানে উপরের ফ্যাক্টরগুলো তাঁদের চোখে ধরা পড়ে। অন্যদিকে স্পিনে স্ট্রাইক রোটেশনে কিছুটা দুর্বলতার কারণে দেশের মাটিতে রিয়াদের চেয়ে সাকিব,মুশিরা মিডল অর্ডারে বেশি সফল হন বাংলাদেশের উইকেট আর পিচের কন্ডিশনের কারণে।

মাশরাফির কথার সাথে একাত্মতা রেখেই, বাংলাদেশের টিম ব্যালেন্সের জন্য রিয়াদ কয়েক হাজার রান স্যাক্রিফাইস করেছে। যার জন্য আমাদের তাকে ভাল উইকেটে না খেলানো এবং তাকে যথাযথভাবে অ্যাবিলিটি অনুসারে ব্যবহার না পারার ব্যর্থতাই দায়ী।

অবশ্যই নিজের দায় রিয়াদ এড়াতে পারেন না। কারণ, ক্যারিয়ারের শুরুর অ্যাভারেজ ব্যাটার থেকে গুড ব্যাটার, এরপর ভেরি গুড ব্যাটার হবার পরেও তিনি তার মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেন নি, যার জন্য মূলত ফিটনেস নিয়ে তার খামখেয়ালিপনাই মূখ্য ভূমিকা রেখেছিল। ফুল ফর্মের রিয়াদ আসলেই দুর্দান্ত, ভয়ংকর সুন্দর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link